ক্ষতবিক্ষত ব্যাংকখাত, মোট ঋণের ২৫ শতাংশ পৌঁছাবে খেলাপির খাতায়!

২ সপ্তাহ আগে
খেলাপি ঋণ নির্ধারণে আন্তর্জাতিক রীতি আবারও অনুসরণ শুরু করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে প্রকৃত খেলাপির পরিমাণ পৌঁছাতে পারে বিতরণ করা ঋণের ২৫ শতাংশে। সরকারি সহায়তায় পরিকল্পিতভাবে ব্যাংক লুটপাটের প্রকৃত চিত্র, এর মাধ্যমেই বেরিয়ে আসবে। আতঙ্কিত না হয়ে বরং সঠিক পরিসংখ্যান তুলে ধরা ও ঋণ পুনরুদ্ধারে জোর দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।

জুলাই-আগস্টে পট পরিবর্তনের পর ব্যাংকে রাখা সাধারণ মানুষের অর্থ লোপাটের নানা তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। আওয়ামী সরকারের দেড় যুগে কৌশল আর ক্ষমতার দাপটে নানাভাবেই ব্যাংক থেকে বের করে নেয়া হয়েছে লাখ লাখ কোটি টাকা। ভুয়া নথিপত্রের মাধ্যমে ঋণ ছাড়; আর একাধিক সার্কুলার দিয়ে মন্দ ঋণের কখনও ১০ শতাংশ, কখনও ২ শতাংশ অর্থ জমা দেয়ার সুযোগ দিয়ে পুনঃতফসিল বা ভাল শ্রেণির ঋণ হিসেবে যোগ করার অনৈতিক সুযোগ দিয়েছে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংক।

 

এতে ধ্বংস করা হয়েছে ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা। যার ফল, আওয়ামী সরকারের ১৬ বছরে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। তবে এবার ক্ষতবিক্ষত ব্যাংক খাতকে পুনরায় সজ্জিত করতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন পর্ষদ। ঋণ শ্রেণিকরণের জন্য মান নির্ধারণে অনুসরণ করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক গাইডলাইন। এতে ৯০ দিনে একজন গ্রাহক ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলেই তাকে মন্দ গ্রাহক হিসেবে নির্ধারণ করতে পারবে ব্যাংকগুলো।

 

আরও পড়ুন: দুই প্রকল্পে ৯০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক

 

এমন উদ্যোগে ব্যাংক খাতে খেলাপির পরিসীমা মোট বিতরণ করা ঋণের ২৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, খেলাপি ঋণের আসল চিত্র তুলে ধরা হবে। এটি কমিয়ে রাখার কোনো ইচ্ছা নেই।

 

ব্যাংক খাতে যখন দুরবস্থা, তখন খেলাপিদের বন্ধকি সম্পদে শক্তভাবেই হাত দেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের। অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যাংক থেকে টাকা বের করে নিয়ে গেছে, তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এটি করতে হবে।

 

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মোস্তফা কে মুজেরি বলেন, ব্যাংক থেকে পাচার হওয়া অর্থ জনগণের। এ অর্থ উদ্ধার করতে হবে। না হলে ব্যাংকগুলোর টিকে থাকা কষ্টকর।

 

ঘুণেধরা ব্যাংক খাতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে বর্তমানে খেলাপির খাতায় যুক্ত হয়েছে মোট ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশ অর্থ।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন