ক্রীড়াসামগ্রীর ওপর আরোপিত কর কমানোর দাবি বাফুফে সভাপতির

৪ দিন আগে
ক্রীড়াক্ষেত্রে বাজেট বাড়ানোসহ, ক্রীড়াসামগ্রীর ওপর আরোপিত কর কমানোর দাবি জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্টেডিয়ামগুলো সংস্কারে ক্রীড়া পরিষদকে তাগিদ দিয়েছেন তিনি। এদিকে, দেশের ক্লাবগুলোকে নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট এবং বিদেশে প্রীতি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা রয়েছে ফেডারেশনের। ফুটবলের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে শনিবার (১৪ জুন) সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি।

সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে জাগরণ ঘটেছে দেশের ফুটবলের। সেই উন্মাদনা ধরে রেখেই সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ফুটবল ফেডারেশনের। তাই নিজেদের সাম্প্রতিক ব্যবস্থাপনা পর্যালোচনা আর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন বাফুফে কার্যনির্বাহী কমিটির। যেখানে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশন প্রধান তাবিথ আউয়ালসহ কার্যনির্বাহী কমিটি ১৪ সদস্য। 

 

ক্রীড়াক্ষেত্রে বাজেট বাড়ানোসহ, ক্রীড়াসামগ্রীর ওপর আরোপিত কর ন্যূনতম কমানোর দাবি জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি। সঙ্গে ঘরোয়া লিগের মান বাড়াতে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্টেডিয়ামগুলো সংস্কারের তাগিদ দিয়েছেন তিনি। রাজধানীর একটি ক্লাবে শনিবার ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বাস্তব প্রেক্ষাপট তুলে ধরে দেখিয়ে দেন এই বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় যৎসামান্য। 

 

‘নির্বাচনের পর এই আট মাসের সফলতা বা ব্যর্থতা তুলে ধরার জন্য এই আয়োজন। আমি মনে করি, জবাবদিহিতা থাকা গুরুত্বপূর্ণ। ছয় মাস পরপর এমন আয়োজন হলে জবাবদিহিতা থাকে। দেখুন, বাজেটে ক্রীড়াক্ষেত্রের বরাদ্দ নিয়ে তেমন কথা হয় না। ২ হাজার কোটি টাকার যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তার ৯০০ কোটি চলে যায় বেতন ও মেইন্টেনেন্স, অপারেশনাল ও অন্যান্য বিষয়ে। বাকিটা উন্নয়নমূলক কাজে লাগে।’ 

 

আরও পড়ুন: নতুন নিয়মে শুরু হওয়া ক্লাব বিশ্বকাপের পক্ষে দাঁড়ালেন মেসি

 

তাবিথ আউয়াল আরও বলেন, ‘অনেক কাঠামো পুরোনো, অকেজো, এখানে সংস্কার কাজ করে, মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে আর কতদিন! আমার মনে হয়, পুরোনো কাঠামোগুলো ভেঙে নতুন করে তৈরি করলে ক্রীড়াঙ্গনের জন্য কাজে আসবে। ক্রীড়া পণ্যের ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ ট্যাক্স আমাদের দেশে, এটা যেন বিবেচনা করা হয়; মওকুফ করা হয় বা কমানো হয়। ভারতে এই ট্যাক্স মাত্র ১২ শতাংশ।’ 

 

সারা দেশে বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলো আয়োজনের সফলতা থাকলেও বাফুফে সভাপতি স্বীকার করে নিয়েছেন, জেলাভিত্তিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারেননি নানা সীমাবদ্ধতায়। ‘ফুটবলকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করেছি। চরে, পাহাড়ে, সৈকতে, রাস্তায় এবং অবশ্যই মাঠে বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতা হয়েছে। অনূর্ধ্ব-১৪ ফুটবল চলছে। ইয়ুথ ডেভেলপমেন্টে জোর দেওয়া হয়েছে। জেলা ফুটবল আমরা চালু করতে পারিনি। এমন নয় যে, বিষয়টা আমরা এড়িয়ে গেছি, আমরা চেয়েছি বয়সভিত্তিক দিয়ে শুরু করতে। এরপর ধাপে ধাপে জেলা, আন্তঃজেলা শুরু করতে চাই।’ 

 

জাতীয় দলে হামজা-সমিতদের অন্তর্ভুক্তির পর নিজেদের শক্তিমত্তার প্রমাণ দিয়েছে সিঙ্গাপুর ম্যাচ দিয়ে। তবে পরবর্তী ফিফা উইন্ডোতে আরও উপরের র‌্যাংকিংয়ের দলের সঙ্গে খেলার পরিকল্পনা বাংলাদেশের। ‘আরেকটু উচ্চ পর্যায়ের টিমের বিপক্ষে আমরা খেলতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, যত কোয়ালিটিফুল অপোনেন্ট (প্রতিপক্ষ) আমাদের থাকবে, ততোই আমাদের কোয়ালিটি ইমপ্রুভ হবে। ভবিষ্যতে অলিম্পিকস কোয়ালিফায়ার আসবে, এশিয়ান গেমস আসবে, ওয়ার্ল্ড কাপ আসবে; তো এই প্রস্তুত হওয়ার জন্য ওই লেভেলের টিমের সাথেও আমাদের কিন্তু প্রতিযোগিতামূলকভাবে খেলতে হবে।’ 

 

আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ সামনে রেখে সংস্কার হচ্ছে মেক্সিকোর আজতেকা স্টেডিয়াম

 

এদিকে ন্যাশনাল টিমের পাশাপাশি ঘরোয়া লিগগুলো নিয়েও বিস্তর পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বাফুফে। দেশের লিগগুলোর পাশাপাশি ক্লাবগুলোর বিদেশে প্রীতিম্যাচ নিয়েও ভাবনা রয়েছে ফেডারেশনের। ‘এএফসিতে আবাহনী এবং বসুন্ধরা খেলার জন্য অনুমতি পেয়েছে। আমরা কাজ করবো, বাকি যে ক্লাবগুলো আছে- মোহামেডান, ফর্টিস, ব্রাদার্স ইউনিয়ন; তাদেরকে নিয়েও এএফসি লাইসেন্সিং করে যেন আরও ক্লাবদেরকে আমরা ইন্টারন্যাশনাল পর্যায়ে নিতে পারি। অফ সিজনে কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট, অফ সিজনে কিছু অন্য দেশে প্রীতি ম্যাচ; যেমন আপনারা জানেন যে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বা অন্যান্য ক্লাবগুলো অফ সিজনে বিভিন্ন দেশে যায় ক্লাব ফুটবল বা টুর্নামেন্ট খেলার জন্য। আমরা সেই চিন্তা, চেতনাও সামনে রাখছি।


এছাড়া, নতুন সিজন শুরু হওয়ার আগে বাকি থাকা বেশ কিছু কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি। প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে বলতে গিয়ে বাফুফে সভাপতি স্বীকার করে নিয়েছেন নিম্ন মানের মাঠে প্রিমিয়ার লিগের খেলাগুলো আয়োজনের। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সামনের দিনগুলোতে এই দিকের উন্নতিতে। 

 

‘আমাদের মাঠগুলো আমাদের চাওয়া অনুযায়ী উন্নত করতে পারিনি। জাতীয় স্টেডিয়াম আমরা ফিরে পেয়েছি। কিন্তু যে স্টেডিয়ামগুলো আমরা পেয়েছি লিগ চালানোর জন্য, চর্চা করার জন্য, সেগুলোর (মানের) কমতি আছে, সেটা আমরা মানি এবং স্বীকার করি। তবে আশা করি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে এসব ক্ষেত্রে আমরা আপনাদের উন্নতি দেখাতে পারব।’

 

‘আমাদের দলের খেলা, মাঠ, জার্সি, ইকুয়েপমেন্ট ‘নিম্নমানের’ ছিল বলে অভিযোগ ছিল, সেখানেও আমরা উন্নতি করছি। এখন আমাদের চাওয়া বাংলাদেশ দল যখন মাঠে নামবে, তখন যেন পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারে, সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন