ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল এখন অবস্থান করছে ভারতে। গত ৪ অক্টোবর ভারতের কাছে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক রোস্টন চেইস বলেছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পতনের কারণ অবকাঠামোর সমস্যা ও অর্থের ভোগান্তি। তবে লারা মনে করেন অর্থ ও প্রযুক্তিগত ঘাটতি রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে। তবে খেলোয়াড়দের মধ্যে দেশের হয়ে খেলার আবেগ ও ভালোবাসার ঘাটতিকেই প্রধান সমস্যা মনে করছেন তিনি।
সম্প্রতি ভারতে একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে লারা বলেছেন, ‘কিছু করতে হলে অবশ্যই সেটির জন্য মূলধন লাগবে। অবশ্যই সেটি বড় একটি ব্যাপার। তবে রোস্টন চেইজ ও অন্যদের প্রতি আমার তাগিদ, ক্রিকেট কি তারা হৃদয়ে ধারণ করে? তারা কি সত্যিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলতে চায়? এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এসব থাকলেই কেবল পথ বের করা সম্ভব।’
ক্যারিবীয় কিংবদন্তি আরও বলেন, ‘৩০-৪০ বছর আগে আমাদেরও ভালো সুবিধা বা আধুনিক প্রযুক্তি ছিল না। ভিভ রিচার্ডসও ভালো প্র্যাকটিস পিচে ব্যাটিং করতেন না। কিন্তু তখন খেলোয়াড়দের ভেতরে দেশের হয়ে খেলার আবেগ আলাদা ছিল। আমি তরুণদের বলব, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলা একটা সম্মানের ব্যাপার। প্রতিটি অভিভাবকই চেয়েছেন তাদের সন্তান দেশের হয়ে খেলুক। সেই মানসিকতা ফিরিয়ে আনতে হবে।’
আরও পড়ুন: মারা গেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম বিশ্বকাপ জেতা তারকা
অর্থের পাশাপাশি ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলাকেও গুরুত্ব সহকারে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন লারা। তার মতে, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাইরে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার চেষ্টা করায় একজন ক্রিকেটারকেও দায় দিতে পারব না। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলা আর পাঁচ-ছয়টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার যে অসমতা (আয়ের ক্ষেত্রে), এটা অন্যরকম। ক্রিকেটারদের প্রতি সেই দরদ থাকতে হবে। পাশাপাশি দেশে এটাও নিশ্চিত করতে হবে, ক্রিকেটাররা এবং ভবিষ্যতের ক্রিকেটাররা যেন উপলব্ধি করতে পারে যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’
এরপর আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসির উদাহরণ তুলে ধরে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন লারা। তিনি বলেন, ‘আর্জেন্টিনার দিকে যদি তাকান, মেসি তো বেড়ে উঠেছে ইউরোপে। কিন্তু খেলে আর্জেন্টিনার হয়ে। (ক্লাব ফুটবলে) সে খেলেছে বার্সেলোনা, পিএসজিতে, তাকে খেলতে দেয়া হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার আরও অনেক ফুটবলারই ইউরো খেলে এবং দেশের হয়েও খেলে, সেটায় গর্ব খুঁজে নেয়।’
ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আগামী ১০ অক্টোবর মাঠে নামবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিল্লীতে সেই টেস্ট শেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাদা বলের দলের ক্রিকেটাররা আসবেন বাংলাদেশ সফরে।