১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে যায় আদরের সন্তান। অবশ্য সন্ধ্যার মধ্যে সন্তান ফিরেও পান তারা। নবজাতক সন্তানকে নিয়ে কেমন আছেন সুজন-ফারজানা জানতে গত বুধবার বিকেলে তাদের সঙ্গে দেখা করতে যান সময় সংবাদের প্রতিবেদক।
খুলনা নগরীর শিপইয়ার্ড সড়কের অক্সিজেন মোড়ের ৭ নম্বর রোডে ছোট্ট একটি ঘরে দেখা মেলে তাদের। সুজনের বাড়ি মোংলায় হলেও ডাক্তার দেখানোর সুবিধার্থে কয়েকদিন ধরে এখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকছেন তারা। মাথা নিচু করে ছোট ঘরে ঢুকতে হয় সেখানে, থাকতে হয় কিছুটা জড়সড় হয়ে। তবে এ দৈন্যতা তাদের মুখের হাসি একটুও মলিন করতে পারেনি।
মির্জা সুজন বলেন, ‘সেদিন আমি মোংলায় ডিউটিতে ছিলাম। দুপুরের একটু আগে ভিডিও কলে ছেলেকে দেখে আবার কাজ শুরু করি। কিছু সময় পরেই ফোন দিয়ে জানায় বাবুকে খুঁজে পাচ্ছে না। আমার যে তখন কি অবস্থা, সঙ্গে সঙ্গে চলে আসি হাসপাতালে। দেখি সবাই কাঁদতেছে। কি করব, কোথায় খুঁজবো বুঝতেছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরপরে আল্লাহর রহমতে বাচ্চাকে ফিরে পাই। ছোট্ট এই ঘরে আমার ক্ষুদে রাজ আর ওর মাকে নিয়ে থাকছি। শুধু ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি। কত যে শান্তি লাগে বলে বুঝাতে পারব না।’
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে মাকে অচেতন করে তিন মাসের শিশু চুরি
শিশুর মা ফারজানা বলেন, ‘আমি কোলের মানিককে ফিরে পেয়েছি। আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। এভাবেই যেন হাসি আনন্দে আমাদের দিনগুলো কাটে সেই দোয়া চাই।’
উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর খুলনা নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন শাহজাদী নামে এক নারী।
এর আগে, পর্যায়ক্রমে ৪টি মেয়ে সন্তান হয়। এর পরপরই তাকে হাসপাতালে রেখে চলে যান স্বামী সিরাজুল ইসলাম, আসেননি একবারও। এমন পরিস্থিতির মাঝে ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে একই হাসপাতালে জন্ম নেয়া আরেকজনের ছেলেশিশু চুরি করে বাড়ি নিয়ে যান শাহজাদীর মা নার্গিস বেগম। অপরের শিশু বাড়িতে দেখে পরিবারের অন্য সদস্যরা দ্রুত তাকে নিয়ে আসেন হাসপাতালে এবং ফিরিয়ে দেন অভিভাবকের কাছে।
পরবর্তীতে এই ঘটনা নিয়ে মামলাও হয়েছে। শাহজাদী তার ১৩ দিন বয়সী কন্যাকে নিয়ে কারাগারেও গিয়েছেন। তিনি এখন জামিনে রয়েছেন। মামলার বাদী সুজনও চান না এই মামলা চালাতে। ৩ দিন সুজনের ছেলেকে দুধ পান করিয়েছেন শাহজাদী। তাই শাহজাদীকে দুধ মাতা হিসেবে স্বীকৃতিও দিয়েছেন তিনি।