কোনো মামলারই প্রতিবেদন দেয়নি পুলিশ, বলছেন আইনজীবীরা

৫ দিন আগে
সরকার পতনের পর জুলাই হত্যাসহ রাজনৈতিক বিভিন্ন ঘটনায় ঢাকায় হওয়া কোনো মামলারই তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি পুলিশ। আদালতে নিয়মিত হাজিরা চললেও মামলায় নেই দৃশ্যমান অগ্রগতি। এমন কী, রিমান্ডের তথ্যও কেস ডাইরিতে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হচ্ছে না বলে জানান আইনজীবীরা। তবে রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, স্বাভাবিকভাবেই চলছে মামলার কার্যক্রম। অভ্যুত্থানকারীরা জানান, মামলা বাণিজ্য ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির পুনরাবৃত্তি দেখতে চান না তারা।

সম্প্রতি সময় সংবাদের সরেজমিন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

 

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে নির্বিচার গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। অঙ্গহানিসহ আহত হয়েছে প্রায় ২০ হাজার। এসব ঘটনায় মামলা হলেও ৪ থেকে ৫ মাসেও বিচারে নেই তেমন অগ্রগতি। এখন পর্যন্ত একটি মামলারও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি পুলিশ। অনেক ক্ষেত্রে বাদির সঙ্গে যোগাযোগও করেননি তদন্ত কর্মকর্তা। এরমধ্যে এজাহার থেকে নাম প্রত্যাহারে একের পর এক আবেদন জমা পড়ছে আদালতে। এমন বাস্তবতায় এসব মামলার ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন আইনজীবীরা।

 

আইনজীবী ও বিএনপির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদীন মেজবাহ সময় সংবাদ বলেন,

 আমাদের জানা মতে একটা আসামিরও ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন এমন তথ্য আমাদের কাছে নেই। আবার এই যে রিমান্ডে চলছে গ্রেফতার চলছে এগুলো আদালতের রুটিন মাফিক কাজ। বাদিপক্ষ সঠিকভাবে যদি সেই প্রমাণ করতে না পারেন, তাহলে বাংলাদেশে এই যে জুলাই-আগস্টে শহীদ হয়েছেন, তাদের হত্যার বিচার হবে বলে আমি মনে করি না।

 

আইনজীবী শ্রী প্রাণ নাথ বলেন, তদন্তকারীর তদন্তের পর যে রিপোর্টটা আসে, সেই রিপোর্টে বলা হয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে কিন্তু কী তথ্য পাওয়া গেছে, এ ধরনের কোনো ব্যাখ্যা তার রিপোর্টের কোথাও নেই।

 

তবে মামলা প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবেই চলছে বলে মনে করেন ঢাকা মহানগর ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী।

 

আরও পড়ুন: অভ্যুত্থানের পর শেখ পরিবারের কারো নামে মামলা করল দুদক

 

বিচারে কোনো উদারতা দেখানো হচ্ছে না বলেও জানান পাবলিক প্রসিকিউর।

 

তিনি আরও বলেন, 

সরকারের উদারনীতি একটা জায়গায় আছে সেটা হলো, এ মামলায় যারা নিরপরাধ তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। আবার যারা অপরাধী ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাদের আইনের মাধ্যমে মামলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। রিমান্ডে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো প্রকাশ করবেন না তদন্ত কর্মকর্তারা। সেখানে আদালতের নির্দেশনা দেয়ার কোনো ক্ষমতা নেই। যখন পুলিশ রিপোর্ট আসবে, তখন আদালতের ক্ষমতায় চলে আসবে।    

 

গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রনেতারা বলছেন, অভিযোগ গঠনে কালক্ষেপণ, মামলা বাণিজ্য ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির পুনরাবৃত্তি দেখতে চান না তারা।

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, 

৪ থেকে ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও মামলার কোনো অগ্রগতি আমরা দেখতে পাইনি। একটা মামলারও অভিযোগপত্র দেয়া হয়নি। সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে আমরা সুবিচার নিশ্চিতের জন্য যে লড়াই সংগ্রাম করছি, সেখানে মামলা হওয়ার জন্য মামলা হওয়া আর সুবিচাার নিশ্চিত হওয়ার জন্য মামলা তার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আহ্বান জানাই যে, মামলা কোনো গুরুত্ব নেই সেই মামলা যেন না হয়। আর যে মামলাগুলো গুরুত্ব রয়েছে তার ন্যায় বিচার দেখতে চাই।

 

  ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের যথাযথ উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান এ ছাত্রনেতার।
 

 


 

 

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন