হাটবাটি হাটের ঐতিহ্য বহু পুরোনো। প্রায় অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এই হাট কেবল বটিয়াঘাটার নয়, সমগ্র খুলনা অঞ্চলের মানুষের কাছে পরিচিত। তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখানে তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি।
সরেজমিন দেখা গেছে, অব্যবহৃত ভবনটির রং উঠে যাচ্ছে; নষ্ট হয়ে গেছে বৈদ্যুতিক বাতি, পানির কল ও বেসিন। ভেতরে জমে আছে ময়লা-আবর্জনা। নিচতলার কিছু অংশ পরিণত হয়েছে ছাগল ও কুকুরের আশ্রয়স্থলে। ভবনে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি। অথচ ব্যবসায়ীদের জন্য ওপরতলায় ২৩টি এবং নিচতলায় ৪টি দোকান নির্মাণ করা হয়েছিল।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, কোটি টাকার এই প্রকল্প শুধু নামকাওয়াস্তেই উদ্বোধন করা হয়েছে, ব্যবহার হচ্ছে না। এর ফলে সরকারের রাজস্ব আয় কমছে, আর বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা নতুন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, অবিলম্বে দোকান বরাদ্দ দিয়ে বিপণি বিতান চালু করলে সরকারের বিনিয়োগ সার্থক হবে, বাজারে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে, এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন গতি আসবে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জ / ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে অফিস, আতঙ্কে খোদ ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক বলেন, ‘এখানে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেয়ার জন্য আমরা অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করছি, কিন্তু এটি চালুর কোনো উদ্যোগই নেই। যে বিপণিবিতান দুই বছর আগে উদ্বোধন হলো, সেটি এখনও কেন চালু হচ্ছে না?’
আরেক স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, ‘এই হাটের গুরুত্ব অনেক। সরকারি উদ্যোগে মার্কেট নির্মাণ হওয়ায় আমরা ভেবেছিলাম ব্যবসা আরও প্রাণবন্ত হবে। কিন্তু উদ্বোধনের পরও চালু না হওয়ায় তা ব্যর্থতায় পরিণত হয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসনেয়ারা তন্নী বলেন, ‘আমি এরই মধ্যে মার্কেট ভবনটি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। মার্কেট চালু করার প্রক্রিয়া চলছে। খুব দ্রুতই দোকানগুলো বরাদ্দ দেয়া হবে।’
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, দেশব্যাপী গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (সিআরএমআইডিপি) আওতায় ২০২০ সালে ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মেসার্স ফয়সাল ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ৩ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে কাজটি সম্পন্ন করে।
নির্ধারিত সময়সীমা ছিল ২০২১ সাল, তবে দুই ধাপে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে প্রকল্পটি হস্তান্তর করা হয়। তবে ২০২৩ সালের ১২ অক্টোবর তৎকালীন খুলনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ শ্রী পঞ্চানন বিশ্বাস এমপি ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন।
]]>