মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিনগত রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দলটির দপ্তর সম্পাদক (সহ সভাপতি পদ মর্যাদার) মো. জাহাঙ্গীর আলম সাক্ষরিত একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ পোস্ট করা হয়। পরে সেই নোটিশটি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
কারণ নোটিশ পাওয়া নেতারা হলেন, বোদা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রায়হানুল আলম প্রধান রিয়েল, বোদা পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব রাকিবুল আহসান রম্য (রম্য ইসলাম), বোদা পাথরাজ সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবু সাঈদ প্রামাণিক (সাঈদ আহমেদ), সদস্য সচিব মাজেদুর সরকার মুন্না।
নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল পঞ্চগড় জেলা শাখার অধীনস্থ বোদা উপজেলা, বোদা পৌর এবং বোদা পথরাজ কলেজ ছাত্রদলের দায়িত্বশীল পদে আসীন থেকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগের ভিত্তিতে আপনাদের বিরুদ্ধে কেন স্থায়ী সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এই মর্মে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হলো। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ নির্দেশনা দেন।
তবে শোকজ নোটিশ হাতে না পেলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে দলটির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেখে ও দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যেমে জেনেছেন বলে জানান নেতারা। দলীয় শৃঙ্খলা মেনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে নোটিশের জবাব দেবেন তারা। এর আগে গত সোমবার (৭ জুলাই) বোদা উপজেলার ছাত্রদলের চার নেতাকে বহিস্কারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে নেতৃত্ব ও বক্তব্য দেয়ার কারণে শোকজ করা হয়েছে বলে মনে করছেন শোকজ হওয়া চার নেতা।
আরও পড়ুন: চাঁদাবাজি ও দখলবাজির অভিযোগে সাভারে বিএনপি নেতা মুশা বহিষ্কার
এ বিষয়ে বোদা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রায়হানুল আলম প্রধান রিয়েল সময় সংবাদকে বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রদলের পেজে দেখেছি। নোটিশে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ধারণা করছি মঙ্গলবারের বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশে অংশগ্রহণের কারণেই নোটিশ করেছে। আমরা দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যেহেতু নোটিশ করা হয়েছে তাই আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে আমাদের জবাব উপস্থাপন করব। তবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে আমাদের অংশগ্রহণের মূল কারণ ছিল- রোববারের হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের কোনো নেতাকর্মী সেখানে ছিল না।
এর আগে, গত রোববার (৬ জুলাই) বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ সভাপতি ও তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা রিয়াজ পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সাংসদ মোজাহার হোসেনের কবর জিয়ারত করতে যাচ্ছিলেন। এসময় পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাকোয়া বাজারে পৌঁছালে তার হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় কিছু লোকজন তাকে বেধরক মারধর করে। যার একটি ১৩ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজি যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পরেই তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঠাকুরগাঁও ও পরে দিনাজপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
এদিকে ওই দিন রাত ১২টার পর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ তুলে বোদা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব জীবন সরকার, বোদা পৌর ছাত্রদলের সভাপতি নাজমুল ইমন, সাকোয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আশিক ও যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম ইসলামকে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এমনকি তাদের সাথে কোন সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখারও নির্দেশ দেয়া হয়।
পরে তাদের বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহার ও তাদেরকে স্বপদে বহাল রাখার দাবিতে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে বোদা উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বোদা উপজেলা, পৌর ও পাথরাজ সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদল। সমাবেশে শোকজ নোটিশ পাওয়া চার নেতা বক্তব্য রাখেন।
]]>