কেন স্বাধীনভাবে খেলতে পারেন না বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা, ব্যাখ্যা করলেন সোহান

১ সপ্তাহে আগে
চাপের মুহূর্তে বরাবরই এলোমেলো ক্রিকেট খেলার একটি প্রবণতা আছে বাংলাদেশ দলের। জাতীয় দলের সর্বশেষ সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর এবং 'এ' দলের সিলেট টেস্ট এর সবচেয়ে টাটকা উদাহরণ। অনেকসময় ব্যক্তিগত মাইলফলক কিংবা পরিসংখ্যান একটু উন্নত করার জন্য জয়ের ন্যুনতম সুযোগটাকে লুফে নিতে ভয় পান ক্রিকেটাররা। সমর্থকদের মনে দীর্ঘদিনের প্রশ্ন, এত সুযোগ-সুবিধা পেয়েও বাংলাদেশ দলের এই হাল কেন? এবার উদাহরণ টেনে ভালোভাবে এর ব্যাখ্যা দিলেন নুরুল হাসান সোহান।

মিরপুর টেস্টে ড্র করে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। সিলেট টেস্টে শেষ এক ঘণ্টায় নাটকীয় পতন না হলে হয়তো পুরো সিরিজই ড্র হতে পারত। সেই ম্যাচে শেষ এক ঘণ্টায় ৬ উইকেট হারিয়ে সহজ ড্রয়ের ম্যাচ হেরেছে টাইগার 'এ' দল। স্বাভাবিকভাবেই সিরিজ হারের পর এই প্রশ্ন এসেছে সংবাদ সম্মেলনে। আর এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়েই বাংলাদেশের ক্রিকেট কাঠামোর অনেক বড় কমতি তুলে ধরেছেন 'এ' দলের অধিনায়ক।  

 

চাপের মুহূর্তে বাংলাদেশের এলোমেলো ক্রিকেট খেলার কারণ নিয়ে সোহান বলেন, 'প্রতিবন্ধকতাটা মানসিক, এটা আমাদের পার করতে হবে। বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতির জন্য বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ। আমি একটা উদাহরণ দিই....২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমাদের কোচ ছিল শ্রীরাম (শ্রীধরন শ্রীরাম)। আমি ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ''ভারতে কোনো নতুন খেলোয়াড় এসেই রান পায়, আমাদের সমস্যাটা কী?'' ও আমাকে বলেছে, এটা মানসিক প্রতিবন্ধকতা। আমরা ভাবি, জাতীয় দলে খেলতে পারলে কী হবে, না পারলে কী হবে বা এখান থেকে বাদ গেলে কী হবে। ওদের কিন্তু ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করার সময় নাই। ওদের যে কাঠামো আছে, ওরা রঞ্জি ট্রফি খেলছে, অন্যান্য টুর্নামেন্ট খেলছে, আইপিএল আছে। ওদের কোনো মানসিক প্রতিবন্ধকতা নেই, স্বাধীনভাবে খেলতে পারছে। ওই স্বাধীনতা নিয়ে খেলতে পারলে আমাদেরও মানসিক প্রতিবন্ধকতা এড়ানো সহজ হবে।'    

 

দলের মধ্যে একটি সংস্কৃতির পরিবর্তন চান সোহান। জাতীয় দল বা যেকোনো দলে খেলার সময় ব্যক্তিগত নৈপুণ্য নয় বরং দলের জন্য খেলার প্রবণতা সৃষ্টির সংস্কৃতি চান 'এ' দলের অধিনায়ক। খেলার মধ্যে থাকার জন্য যেন ভাবতে না হয় ক্রিকেটারকে, এমন সংস্কৃতি চান তিনি। অর্থাৎ খেলোয়াড়দের জন্য বেশি বেশি সুযোগ তৈরির দিকে জোর দিয়েছেন তিনি। 'এ' দলের এই সিরিজে ড্রেসিংরুমে এই সংস্কৃতি তৈরির চেষ্টা করেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

 

আরও পড়ুন: বৃষ্টিই শেষ হাসি হাসল মিরপুর টেস্টে, বাংলাদেশের সিরিজ হার

 

সোহান বলেন, 'অধিনায়ক হওয়ার বিষয়টা যখন জানতে পারি তখন খেলোয়াড়দের নিয়ে একটা সভা করেছিলাম। আমাদের এই সংস্কৃতিটাই পরিবর্তন করা উচিত যে আমরা 'এ' দলে আসলাম...আমি অনেকদিন জাতীয় দলের বাইরে আছি বা অনেকেই জাতীয় দলের বাইরে আছে...তাই এখানে আসব ব্যক্তিগত কোনো লক্ষ্য নিয়ে। আপনি যেখানেই খেলেন না কেন, আমি মনে করি এটা দলগত খেলা। এখানে ব্যক্তিগত কোনো লক্ষ্য থাকতে পারে না। এটা নিয়েই কথা বলেছি, কে বাইরে আছি বা কে দলে ব্যাক করব, এটা নিয়ে যাতে আমরা না ভাবি। 'এ' দলের হয়ে খেলছি, আমরা বাংলাদেশকেই প্রতিনিধিত্ব করছি। আমরা যেন জেতার জন্য খেলি এবং দলের যেটা দরকার সেটা নিয়েই যেন ভাবি।'

 

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের ড্রেসিংরুমে ব্যক্তিগত কোনো লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা ছিল না। কারণ এই সংস্কৃতিটাই আমরা পরিবর্তন করতে চাই। যখনই কথা হয়েছে তখনই কথা হয়েছে কীভাবে দলকে জয় এনে দেয়া যায় সেই বিষয়ে। আর এই সংস্কৃতিটা শুধু আমি বললাম বা আরেকজন বলল, তাতেই পরিবর্তন করা যাবে না। এটার জন্য সবার সাহায্য প্রয়োজন।' 
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন