বড়দিন আসার আগের দিন রাত থেকেই শুরু হয়ে যায় সান্তাক্লজ নিয়ে উন্মাদনা। খ্রিস্টান শিশুরা মনে করে, বড়দিন আসার আগের দিন রাতে কিংবা বড়দিনের যেকোনো সময় সান্তাক্লজ তাদের জন্য উপহার নিয়ে আসবেন।
বড়দিনের সঙ্গে সান্তাক্লজ নামটি এতটাই জড়িয়েছে যে পৃথিবীজুড়ে বিখ্যাত এই নামটি। কিন্তু তার সম্পর্কে খুব কম মানুষেরই পুরোপুরি স্পষ্ট ধারণা রয়েছে। আসুন, আজকের বড়দিনে জেনে নিই সান্তাক্লজের প্রকৃত পরিচয় সম্পর্কে।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতাব্দীর মাঝামাঝির ঘটনা। ওই সময়ে অর্থাৎ ২৭০ খ্রিস্টাব্দে ১৫ মার্চ এক ধনী পরিবারে জন্ম নেন নিকোলাস নামে এক ব্যক্তি। খুব অল্প বয়সেই বাবা, মা মারা যান নিকোলাসের। এরপর নিকোলাস তার সম্পত্তি বিক্রি করে সব অর্থ গরিবদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে শুরু করেন।
খ্রিস্টান ধর্মের ত্রাণকর্তা যিশুর পথ তিনি অনুসরণ করেছিলেন। এরপর মায়ারার বিশপ (খ্রিস্টধর্মীয় উচ্চপদস্থ যাজক বা অধ্যক্ষের পদবি) হন। মায়ারা বর্তমানে তুর্কিতে অবস্থিত।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, নিকোলাস অত্যন্ত ধার্মিক ব্যক্তি ছিলেন। যে কারণে প্রায় সময়ই তাকে অনেক আশ্চর্য হওয়ার মতো কাজ করতে দেখা যায়। এ কারণে নিকোলাসের আরেক নাম ছিল ‘ওয়ান্ডার ওর্য়াকার’।
আরও পড়ুন: বড়দিনে মোমের আলোয় ঘর সাজুক
নিকোলাসের কিছু সুন্দর অভ্যাস ছিল। যার একটি হলো মানুষকে দান করা ও উপহার দেয়া। বিশেষ করে শিশুদের উপহার দিতে খুব ভালোবাসতেন নিকোলাস। তবে দান বা উপহার দেয়ার কাজটি তিনি কখনও দিনের বেলায় করতেন না, করতেন রাতের বেলায়।
নিকোলাস ভাবতেন, দিনের বেলায় এ কাজ যারা করে তারা মূলত লোক দেখানোর জন্য করে। তাই দান ও উপহারের জন্য রাতকেই বেছে নিয়েছিলেন নিকোলাস। প্রভু যিশুও একই পথের পথিক ছিলেন। যিশুর পথগামী নিকোলাসের ৬ ডিসেম্বর মৃত্যু হলে মৃত্যুর পর তাকে সেন্ট বা সাধু বলা হতো।
আরও পড়ুন: অযত্নেও বেঁচে থাকে যেসব গাছ
কারণ জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি তার সময়, অর্থ, মেধা সবই ব্যয় করেছেন অসহায় মানুষের সেবায়। মৃত্যুর পর নিকোলাসকে তাই বলা হতো সেন্ট নিকোলাস যা ডাচ ভাষায় বলা হতো সিন্টার ক্লাশ। সেই থেকেই সিন্টার ক্লাশ মার্কিন সমাজে ‘সান্তাক্লজ’ নামে পরিচিতি পায়।
তাই এ ধার্মিক ব্যক্তির দান ও শিশুদের উপহার দেয়ার বিষয়টি মনে করতেই বড়দিনে অনেকেই লাল-সাদা পোশাকে সেজে উঠেন সান্তাক্লজ। আর নিজের টাকা ব্যয় করেই শিশুদের উপহার দেন নানা ধরনের খেলনা আর চকলেট।
]]>