হোসেইন কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের আবু তাহেরের ছেলে। সে শিকারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। হোসাইনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা সদর হাসপাতালের মেডিসিন কনসাল্টেন্ট (আইসিইউ) অরূপ কুমার রায়।
গত ৩১ মে স্কুল ছুটি হয় বিকেলবেলা। রাস্তা থেকে ডেকে নেয়া হয় আবু তাহেরের ছেলে হোসেইনকে। তাকে বেঁধে বিষপান করানো হয়, তারপর অমানবিকভাবে তার অণ্ডকোষে ঢেলে দেওয়া হয় এসিড।
নিহত হোসেনের বাবা আবু তাহের সময় সংবাদকে বলেন, ‘২ মাস আগে শিকারপুর এলাকার মইনুল হোসেনের মুদি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। এ চুরির ঘটনায় একই এলাকার অটোরিকশা চালক সোলাইমানের ছেলে সাইমুনকে অভিযুক্ত করে মইনুল। পরে গ্রাম্য সালিশে আমি বিচারক হিসেবে থাকি। সেখানে সাইমুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং সাইমুনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ বিচারের জের ধরে সোলাইমানের দুই ছেলে সাইমন ও আলাউদ্দিন আমার ১৪ বছর বয়সী ছেলে হোসেইনকে ডেকে নিয়ে যায় তাদের বাড়িতে। হোসেইনের হাত পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। এক পর্যায়ে জোরপূর্বক বিষপান করিয়ে তার অণ্ডকোষে এসিড ঢেলে দেয়। পরে আমরা হোসেইনকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে ৫ দিন ছিল। তারপর দুইদিন ছিল একটা বেসরকারি হাসপাতালে। হোসেইনের অবস্থায় আরও খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণে তাকে আবার সদর হাসপাতালের আইসিইউতে নিয়ে আসি।’
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় ডেঙ্গুর ভয়াল থাবায় প্রাণ গেল ৩ জনের
হোসেইনের মা শাহেনা বেগম সময় সংবাদকে বলেন, ‘আমার ছেলে ১২ দিন ধরে আইসিইউতে থেকে জীবন মরণের সঙ্গে লড়াই করে আজকে মারা গেছে। চুরির বিচার করতে গিয়ে আজ আমি আমার নিষ্পাপ ছেলেকে হারিয়েছি। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীর বিচার চাই।’
কুমিল্লা সদর হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট (আইসিইউ) অরূপ কুমার রায় সময় সংবাদকে বলেন,
‘তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। বিষক্রিয়ায় তার গলা ফুলে গিয়েছিল, শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। অণ্ডকোষ ঝলসে গিয়েছিল।’
এ বিষয়ে কুমিল্লা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী সময় সংবাদকে বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে দুইজনের নাম উল্লেখ করে কুমিল্লা বুড়িচং থানায় মামলা দায়ের করেছেন। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযানে নেমেছে পুলিশ। দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে।’