কাজে আসছে না সাড়ে ৭ কোটি টাকার ২ ফুটওভার ব্রিজ

২ দিন আগে
অপ্রয়োজনীয় স্থান, ভুল পরিকল্পনা আর নানা ত্রুটির কারণে খুলনায় নির্মিত দুটি ফুটওভার ব্রিজ কোনো কাজে আসছে না। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ বা জনবহুল স্থানে নির্মাণ হলেও এসব সমস্যার কারণে সেতু ব্যবহারে আগ্রহ নেই স্থানীয়দের। যারা ব্রিজে উঠছেন, তারা ব্যবহার করছেন দাঁড়িয়ে ছবি তোলা কিংবা ভিডিও করার জন্য। যাচাই-বাছাই না করেই নির্মাণ করায় কোটি কোটি টাকা পানিতে গেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা ও খুলনা-যশোর মহাসড়কের দৌলতপুরে ৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ফুটওভার ব্রিজ দুটি নির্মাণ করা হয়।


সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, যেন পোস্টার আর ব্যানার টানানোর জন্যই নির্মিত হয়েছে এসব ফুটওভার ব্রিজ। রাজনৈতিক নেতাদের শুভেচ্ছা, ব্যবসায়িক প্রচারণা, কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপণ সবই আছে, মাঝে মধ্যে তরুণ তরুণীরা উঠে আড্ডা দিচ্ছেন বা ছবি তুলছেন। বিভিন্ন সময় পারাপারের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় গড়ে ৭০ জনের বিপরীতে সেতু ব্যবহার করেন মাত্র একজন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সরাসরি সড়ক পার হতে সময় লাগে ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট। এ সড়কে গাড়ির খুব বেশি চাপ থাকে না। বিশ্ববিদ্যালয় গেট থেকে বেরিয়ে ওভারব্রিজে উঠে অন্য পাশে যেতে সময় লাগে ৬ থেকে ৭ মিনিট। সে কারণে ওভারব্রিজের প্রতি লোকজনের আগ্রহ কম।


দৌলতপুরে হেঁটে সড়ক পার হওয়া পথচারীরা বলছেন, একটু দাঁড়ালেই রাস্তা পার হওয়া যায়। সে তুলনায় ফুটওভার ব্রিজ অনেক উঁচু। বয়স্ক লোকজন বা প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্যও বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেই। এ ছাড়া যেখানে প্রয়োজন ছিল সেখানে তৈরি না করে কিছুটা দূরে তৈরি করা হয়েছে বলেও মনে করেন তারা।


আরও পড়ুন: হকারদের দখলে রাজধানীর বেশিরভাগ ফুটওভার ব্রিজ, ভোগান্তিতে পথচারীরা


এ বিষয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিনের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. আশিক উর রহমান বলেন, প্রয়োজনীয়তা যাচাই না করে শুধু দেখানোর জন্যই এসব ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে কার্যত মানুষের তেমন কোনো কাজে আসেনি। এসব কারণে প্রকল্প নেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাইয়ের পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকা প্রয়োজন।


তবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর খুলনা জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, স্থানীয় চাহিদা এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতেই নির্মাণ করা হয় এসব ফুটওভার ব্রিজ। দুর্ঘটনা এড়াতে সাধারণ মানুষদের সময় বেশি লাগলেও ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারের অনুরোধ জানান তিনি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন