নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী (২৩) গলাচিপা ডিগ্রি কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে তার বাবাকে (৭০) নিয়ে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। ঘটনার সময় তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লেগেছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চরমোন্তাজ ইউনিয়নের স্লুইজ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ করেন, স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির নেতা রেজাউল মাতব্বরের ছেলে সায়মুন মাতব্বর (২৩) তাকে নানা ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেন। প্রতিবাদ করলে সায়মুন লোহার রড দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন। এ সময় এগিয়ে এলে তার বাবাকেও মারধর করা হয়। পরে সায়মুনের সঙ্গে যোগ দেন তার চাচাতো ভাই চরমোন্তাজ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি তারিকুল ইসলাম মিঠুন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর দাবি, হামলার সময় সায়মুন ও মিঠুন তার ওড়না এবং বাবার লুঙ্গি টেনে খুলে নেয়। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে মারধরের কারণে তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যায়। এতে তিনি একটি চোখ দিয়েও দেখতে পাচ্ছেন না। এর আগেও সায়মুন তার সঙ্গে জবরদস্তিমূলক আচরণ করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তুষার আহম্মেদ বলেন, ডায়নার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে পুলিশি অনুমতি ছাড়া বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে চরমোন্তাজ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল মুন্সি বলেন, তরুণীর গায়ে হাত দিয়ে বড় ধরনের অপরাধ হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: রংপুরে সাংবাদিক নির্যাতন: প্রতিবাদে পুলিশ কমিশনার কার্যালয় ঘেরাও
এদিকে ঘটনার পর সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত দুই নেতা- চরমোন্তাজ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি তারিকুল ইসলাম মিঠু এবং ছাত্রদল নেতা সায়মুন ইসলামকে বহিষ্কার করেছে জেলা ছাত্রদল। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন অর রশিদের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তারিকুল ইসলাম মিঠুকে সাংগঠনিক পদ থেকে এবং মো. সায়মুন ইসলামকে দলীয় প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা তারিকুল ইসলাম মিঠুন অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'ওই মেয়ে আমার চাচিকে গালাগাল করেছিল। তাই চুপ থাকতে পারিনি। তবে ওই মেয়ে ও তার বাবা আমার চাচাতো ভাই সায়মুনকে আঘাত করেছে। সায়মুন এখন হাসপাতালে ভর্তি।'
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হাওলাদার বলেন, ঘটনাটি শোনার পর ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।