প্রতিবেদন মতে, নতুন পরিকল্পনায় মেঘালয়ের শিলং থেকে আসামের শিলচর পর্যন্ত নতুন মহাসড়ক নির্মাণ করা হবে। এই মহাসড়ককে মিয়ানমারের মাল্টি-মোডাল ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। এরপর কলকাতা বন্দরকে সমুদ্রপথে মিয়ানমারের সিত্তে বন্দরের যুক্ত করা হবে।
এর ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য (সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত) ও পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মধ্যে একটি বিকল্প সংযোগ তৈরি হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গত মাসে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রথম হাই-স্পিড হাইওয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন করেছে। এ প্রকল্পের আওতায় শিলংয়ের কাছে মাওলিংখুং থেকে জাতীয় সড়ক-৬ বরাবর শিলচরের কাছে পাঁচগ্রাম পর্যন্ত ১৬৬.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে।
আরও পড়ুন: ওড়িশায় বজ্রপাতে একদিনে ৯ জনের মৃত্যু
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রকল্পে ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি রুপি ব্যয় ধরা হয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি মিয়ানমারের কালাদান মাল্টি-মোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের সাথে সংযুক্ত হবে, যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যদিয়ে ট্রানজিটের উপর নির্ভরতা দূর হবে।
মিয়ানমারে কালাদান মাল্টি মোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পটি ভারতের অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে এবং এটি কলকাতা সমুদ্রবন্দরকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কালাদান নদীর তীরে অবস্থিত সিত্তে বন্দরের সাথে সংযুক্ত করেছে।
সিত্তে বন্দরটি একটি অভ্যন্তরীণ জলপথের মাধ্যমে মিয়ানমারের পালেতোয়ার সাথে এবং একটি সড়কপথের মাধ্যমে মিজোরামের জোরিনপুইয়ের সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে।
আরও পড়ুন: ৪০ রোহিঙ্গাকে সমুদ্রে ফেলে দিল ভারত
ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেডের (এনএইচআইডিসিএল) কর্মকর্তারা এখন প্রকল্পটিকে জোরিনপুই থেকে লংটলাই হয়ে মিজোরামের আইজল পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
এনএইচআইডিসিএল-এর কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এনএইচআইডিসিএল এই প্রকল্পটি জোরিনপুই থেকে মিজোরামের লংলাই হয়ে আইজল পর্যন্ত নিয়ে যাবে। এটি সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য একটি প্রধান সংযোগকারী পথ হয়ে উঠবে এবং ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির জন্য এই অঞ্চলকে প্রবেশদ্বার হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ‘কালাদান প্রকল্পের সহায়তায় পণ্যসামগ্রী বাংলাদেশের ওপর নির্ভর না করে ওডিশার বিশাখাপত্তনম ও পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছাবে।’
আরও পড়ুন: এনডিটিভির প্রতিবেদন / প্রতিরক্ষা খাতে বাড়তি ৫০ হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ দিচ্ছে ভারত
গত মার্চে বেইজিং সফরকালে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য ‘ভূবেষ্টিত।’ এই অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশই সমুদ্রের (প্রবেশের) অভিভাবক।’ ড. ইউনূসের ওই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ভারত সমুদ্রপথে বিকল্প সংযোগ পথ তৈরির পরিকল্পনা করছে।
]]>