রাজধানী ও সর্বাধিক জনবহুল শহর হলো নমপেন। কম্বোডিয়ার মোট আয়তন এক লাখ ৪১ হাজার ৩৫ বর্গকিলোমিটার, যা দেশটিকে একটি মাঝারি আকারের ভূখণ্ড হিসেবে পরিচিত করেছে।
কম্বোডিয়ায় ইসলামের প্রচার ও প্রসার চ্যাম জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে হয়েছে। চ্যামরা চম্পা রাজ্যের অধিবাসী ছিল, যা বর্তমান ভিয়েতনামের অংশ। খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতকে চ্যামরা চম্পা রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে।
কিছু ঐতিহাসিকের মতে, রসুলুল্লাহ (সা.)-এর শ্বশুর জাহাশ (রা.) ৬১৭ খ্রিস্টাব্দে ইন্দো-চীন অঞ্চলে সফর করেন এবং চ্যামদের ইসলামের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। নবম শতকে চ্যাম সমাজে ইসলাম জনপ্রিয় হতে থাকে এবং ১৬০৭ খ্রিস্টাব্দে একজন চ্যাম রাজা ইসলাম গ্রহণ করলে অধিকাংশ চ্যাম ইসলাম গ্রহণ করে।
বর্তমান মুসলিম জনসংখ্যা
২০২৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কম্বোডিয়ার মোট জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৭৬ লাখ। কম্বোডিয়ার সংস্কৃতি ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশে প্রায় ৩,৬১,৪৮৩ জন মুসলমান বাস করেন, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ২%। এ সময় দেশে ৮৮৪টি মসজিদ ছিল।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে যেভাবে ইসলামের সূচনা হয়েছিল
মুসলিমদের প্রধান খাবার
কম্বোডিয়ার মুসলিমরা প্রধানত ভাত ও মাছ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে, যা দেশের সাধারণ খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। তারা কৃষিকাজ, মৎস্য শিকার, বাণিজ্য এবং হস্তশিল্পের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। চ্যাম মুসলিমরা সাধারণত নিজস্ব গ্রামে বসবাস করে এবং তাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে।
মুসলিমদের সামাজিক অবস্থা
কম্বোডিয়ার মুসলিম সমাজে ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দেন ইমামরা, যাদের হাকিম বলা হয়। মুয়াজ্জিনদের বিলাল বলা হয়। মসজিদভিত্তিক কোরআনি মক্তবগুলোতে ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করা হয়। মুসলিমদের সর্বোচ্চ সংস্থা ‘দ্য হাইয়েস্ট কাউন্সিল ফর ইসলামিক রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স ইন কম্বোডিয়া’ (এইচসিআইআরএসি), যা দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়।
কম্বোডিয়ার মুসলিম সম্প্রদায় তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বজায় রেখে দেশের সামগ্রিক সমাজের অংশ হিসেবে বসবাস করছে। যদিও তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়, তবুও তারা নিজেদের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রেখেছে এবং দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছে।
]]>