সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে তার মরদেহ রাজবাড়ী সদরের বসন্তপুর ইউনিয়নের হাটজয়পুর গ্রামের নিজ বাড়িতে এলে স্বজন ও প্রতিবেশীদের কান্না আর আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে আকাশ-বাতাস।
এর আগে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে মালয়েশিয়ার জোহরবারু এলাকায় ভবন নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত কংক্রিট বালতির দড়ি ছিঁড়ে নিচে চাপা পড়ে তার মৃত্যু হয়।
বিল্লাল হাটজয়পুর গ্রামের জব্বার মোল্লার ছেলে।
আরও পড়ুন: তিন মাস পর সৌদি প্রবাসী আলমের মরদেহ পেলেন স্বজনরা
জানা গেছে, জীবিকার তাগিদে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান বিল্লাল মোল্লা। সেখানে জোহরবারু এলাকায় কনস্ট্রাকশন সাইটে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। গত ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বিল্লাল নিচে দাঁড়িয়ে কংক্রিট বালতিতে খোয়া-সিমেন্ট লোড করে ক্রেনের মাধ্যমে ভবনের ওপরে পাঠানোর কাজ করছিলেন।
বালতি ওপরে পাঠিয়ে কাজের অবসরে চার বছর বয়সী মেয়ে ঐশীর সঙ্গে কথা বলতে থাকেন বিল্লাল। এরইমধ্যে ক্রেনে খালি বালতি চলে আসায় ফোন রেখে দেন তিনি। এরপর আবারও বালতিতে খোয়া-সিমেন্ট লোড করে ওপরে পাঠান বিল্লাল। কিন্তু বালতি আর ওপরে যায়নি। ছিঁড়ে পড়ে তার বুকের ওপর। চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। মেয়ের সঙ্গে কথা বলার মাত্র কয়েক মিনিট পরে নিভে যায় প্রবাসী বাবার জীবন প্রদীপ।
আরও পড়ুন: বিনা খরচে দেশে এলো মালদ্বীপ প্রবাসীর মরদেহ
সোমবার তার মরদেহ রাজবাড়ী সদরের বসন্তপুর ইউনিয়নের হাটজয়পুর গ্রামের নিজ বাড়িতে এলে স্বজন ও প্রতিবেশীদের কান্না আর আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে আকাশ বাতাস। চার বছর বয়সি ঐশীর নিস্তব্ধতা এ শোককে আরও বাড়িয়ে দেয়। পরে বেলা ১১টায় বসন্তপুর রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে বিল্লালের নামাজে জানাজা শেষে তাকে ঈদগাহের সামনের কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বিল্লালের বাবা জব্বার মোল্লা বলেন, ‘ছেলেটি মারা গিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। সে যে মালিকের কাজ করতো, সেই মালিক সামান্য কিছু টাকা পাঠিয়েছেন।’