চলতি বছরের জুলাই এবং আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল ছিল পুরো বাংলাদেশ। তারপর সেপ্টেম্বরে দেশের বিশাল অংশ ছিল ভয়ংকর বন্যায় বিপর্যস্ত। আর এ তিন মাস দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের মূল ক্ষেত্র চট্টগ্রাম বন্দরে ছিল চরম অচলাবস্থা;ডেলিভারি নেমে এসেছিল শূন্যের কোটায়।
তবে সংকটের মাঝেও বছর শেষে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়িয়ে কনটেইনার ও কার্গো পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড গড়ার দোরগোড়ায় চট্টগ্রাম বন্দর। বিশেষ করে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০ লাখ ৭০ হাজার কনটেইনারের পাশাপাশি ১১ কোটি ৪৫ লাখ মেট্রিক টন কার্গো পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছে এখানে, যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরছে পণ্য ডেলিভারি!
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং গত বছরের তুলনায় চলতি বছর বেড়েছে। গত বছর কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছিল ৩০ লাখের মতো। তবে এ বছর সেটি ৩২ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সবশেষ ২০২১ সালে ৩২ লাখ কনটেইনার এবং ১১ কোটি ৬৬ লাখ মেট্রিক টন কার্গো পণ্য হ্যান্ডলিং করে রেকর্ড গড়েছিল চট্টগ্রাম বন্দর। অবশ্য ডলার সংকটসহ নানামুখী জটিলতায় পরবর্তী দুবছর কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি হয়নি।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে ডলার সংকট কাটায় এলসি খোলার বিধিনিষেধ পর্যায়ক্রমে তুলে নিচ্ছে সরকার। আর তাই বেড়েছে আমদানির পাশাপাশি রফতানিও। তবে বেশি পণ্য নিয়ে বড় আকৃতির জাহাজ আসার সংখ্যা বাড়ায় প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না জাহাজ আগমনের পরিসংখ্যানে।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আরিফ বলেন, বেশি পণ্য ধারণক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজে কনটেইনারগুলো আসায় জাহাজের সংখ্যা কমছে। কারণ এতে একবারেই অনেক কনটেইনার আসছে। এছাড়া ডলারসংকট কাটার পাশাপাশি এলসি খোলার বিধিনিষেধও কমে আসছে। ফলে বাড়ছে বাণিজ্য।
আরও পড়ুন: স্থবিরতা কাটিয়ে গতি ফিরছে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে
আন্তর্জাতিক শিপিং লাইনগুলোর দাবি, বৈশ্বিক সংকট এবং মন্দা পরিস্থিতি কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে ইউরোপ-আমেরিকার নাগরিকরা। গুরুত্বপূর্ণ এসব রুটেই বর্তমানে কনটেইনার চলাচল বেড়েছে। তার ইতিবাচক সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশ।
এমএসসি শিপিং লিমিটেডের হেড অব অপারেশন আজমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও আমদানি-রফতানি বাণিজ্য উন্নতির ধারায় রয়েছে। ফলে বাড়ছে দেশের আমদানি-রফতানির পরিমাণ।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক শিপিং ম্যাগাজিন লয়েড'স লিস্ট অনুযায়ী বিশ্বের ব্যস্ততম একশটি বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ৬৭তম অবস্থানে রয়েছে। কনটেইনার হ্যান্ডলিং তুলনামূলক কম হওয়ায় গত তিন বছর ধরে এই তালিকায় ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছিল চট্টগ্রাম বন্দর।
]]>