দুই পা কাজ না করলেও কখনো কারও সাহায্যের হাত বাড়াননি খুরশিদ মাঝি। নিজস্ব সামর্থ্য ও অদম্য মনোবল নিয়ে সংসারের ভার টানছেন। সারাদিন নদীর ঘাটে যাত্রীদের নৌকা পারাপারে সাহায্য করেন, নৌকার দড়ি টানেন। নদীর ঢেউ, বাতাস আর পুরনো নৌকাটি যেন তার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বর্তমানে উন্নত সড়ক যোগাযোগের কারণে নদীপথে যাত্রীর সংখ্যা কমে গেলেও খুরশিদ মাঝি নদীর ঘাট ছাড়েননি। কারণ এটিই তার জীবিকা এবং আত্মসম্মান। তবে বয়সের ভার, আয় অনিশ্চিত ও পারিবারিক কষ্ট নিয়ে দিন কাটছে তার অনিশ্চয়তায়।
এই মানবিক গল্প পৌঁছে যায় কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাঈদুল ইসলামের কানে। সংবাদ পেয়ে ছুটে যান তিনি, দেখা করেন খুরশিদ মাঝির সঙ্গে। কাছ থেকে দেখেন তার জীবনযুদ্ধ, সীমাবদ্ধতার মধ্যে আত্মমর্যাদার টিকে থাকা।
তার কষ্ট, অপ্রতুল আয়, আর অসহায় জীবনের চিত্র দেখে আবেগাপ্লুত হন ইউএনও মাঈদুল ইসলাম। তিনি কটিয়াদী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেন- খুরশিদ মাঝিকে একটি দোকানঘর করে দেয়া হবে, এবং দোকান চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় মালামালও দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: বাবা-মায়ের খোঁজ নেন না প্রবাসী ছেলেরা, পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও
মো. মাঈদুল ইসলাম জানান, সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) থেকে দোকান নির্মাণের কাজ শুরু হবে। এছাড়া সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্যও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খুরশিদ মাঝির চোখে জলে ভাসে নতুন জীবনের আশা। তিনি বলেন, 'আমার দুই পা কাজ না করলেও, আমি কখনো হার মানিনি। নদীর ঘাট আমার জীবনের অংশ, আর এখন উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় নতুন একটা স্বপ্ন দেখতে পাচ্ছি। আমার জন্য যারা পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এবার দোকানের মাধ্যমে আমি নিজের পরিবারের পাশে আরও ভালোভাবে দাঁড়াতে পারব।'