শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় চৌফলদন্ডীতে লবণ মাঠ এবং প্রস্তাবিত লবণ গবেষণা ইন্সটিটিউটের স্থান পরিদর্শন করে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান জানিয়েছেন, চাষিদের স্বার্থ রক্ষা করে লবণ শিল্পের উন্নয়ন ও উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
মূলত কক্সবাজার উপকূলে সূর্যের তাপে লবণাক্ত পানি শুকিয়ে উৎপাদিত হচ্ছে লবণ। চাষিরা কেউ মাঠে পানি দিচ্ছে কেউবা লবণ তুলছেন আবার কেউ কেউ লবণের ওজন করছেন। লবণ উৎপাদনের ভরা মৌসুমে এমন ব্যস্ততা কক্সবাজার উপকূলের চাষিদের। প্রতিবছরই দেশে লবণের চাহিদা বাড়ছে, একই সঙ্গে লবণ উৎপাদনের অতীতের সব রেকর্ডও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু চাষিরা পাচ্ছেন না ন্যায্যমূল্য। যার কারণে হতাশ উপকূলের লবণ চাষিরা।
শুক্রবার সকালে প্রথমে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লবণ শিল্পের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। এরপর সদর উপজেলার চৌফলদণ্ডীতে লবণ মাঠ ও প্রস্তাবিত লবণ গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় চৌফলদণ্ডীতে স্থানীয় চাষিদের কাছে তাদের সমস্যার কথা শুনতে চান উপদেষ্টা। চাষিরা বর্তমানে লবণের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য, চাষের জন্য খাসজমি বন্দোবস্ত না পাওয়াসহ নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
এ সময় সাংবাদিকে উপদেষ্টা আদিলুর তাদের বলেন, লবণ উৎপাদন ও গুণগত মান বাড়াতে সরকার পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে। চৌফলদণ্ডীতে লবণ গবেষণা ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা হচ্ছে। এছাড়া চাষিরা যেন লবণের ন্যায্যমূল্য পান, সেই লক্ষ্যে নীতিমালার আলোকেই লবণ বোর্ড গঠনসহ নানা বিষয়ে সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ভারতকে আমাদের তরকারিতে লবণ দিতে হবে না: জামায়াতের আমির
বিগত ৬৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদনের তথ্য দিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘পাইলটিং প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে লবণ উৎপাদন ও গুণগত মান বাড়বে। তবে চাষিরাও যাতে ন্যায্যমূল্য পান, সেই লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।’
এ সময় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্ উদ্দিন, জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ ও বিসিকের কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবালসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিসিক সংশ্লিষ্টরা জানান, চৌফলদণ্ডীতে ৩০ একর জায়গায় লবণ গবেষণা ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যয় হবে ১৫৪ কোটি টাকা। প্রকল্প প্রস্তাবটি বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। এছাড়া লবণ উৎপাদন বাড়াতে চৌফলদণ্ডীতে ভারত, চীন ও জাপানের চাষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে লবণ উৎপাদনের একটি পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে লবণ শিল্পের উন্নয়ন কার্যালয়।