সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালে ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্লুইচগেট এলাকায় মো. আমানউল্লাহর মেয়ে ফেরদৌস বেগমের (১৯) বাড়িতে আসেন ওই চীনা প্রেমিক। তবে আইনি প্রক্রিয়া শেষে চীনা যুবকের সঙ্গে বাঙালী প্রেমিকা ফেরদৌস বেগমকে বিয়ে দেয়ার কথা জানায় পরিবার।
এ দিকে এ খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে চীনা যুবককে এক নজর দেখতে বাড়িতে ভিড় জমান এলাকাবাসী।
ফেরদৌস বেগম জানান, এক বছর আগে কৌতুহল বসত ওয়ার্ল্ডটক অ্যাপ ডাউনলোড করেন তিনি। পরে সেখান থেকে বাজে ম্যাসেজের কারণে সেটি ডিলিট করার সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক ওই দিনই চীনা যুবক লু চাঁওং তাকে মেসেজ দেন। প্রথম লু চাঁওং এর মেসেজ তিনি গুরুত্ব না দিয়ে এড়িয়ে যান। এরপরও চীনা যুবক তাকে একের পর এক মেসেজ দিয়ে যান। এরপর ম্যাসেজের রিপ্লাই দিলে তাদের মধ্যে দুই তিন দিন ধরে মেসেজ আদান প্রদানের পর তার মনমানসিকতা ভালো মনে হয়।
তিনি আরও জানান, এক পর্যায়ে লু চাঁওং তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি প্রথমে বিয়েতে রাজি হননি। তাকে জানিয়ে দিয়েছেন, পরিবার এতো দূরে বিয়েতে রাজি হবে না। পরে চীনা যুবক তাকে অভয় দিয়ে বলেন, ‘তুমি ভয় পেয়ো না, আমি তোমাকে নিরাপত্তা দেবো। চায়না খুব ভালো, এখানে মেয়েদের গুরুত্ব ও অধিকার বেশি।’ এরপর তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘ এক বছর প্রেমের সম্পর্কে গভীরতা বাড়লে লু চাঁওং সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশে আসার।
আরও পড়ুন: প্রেমের টানে রাজবাড়ীতে এসে বিয়ে করলেন চীনা যুবক
গত ১৫ নভেম্বর তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে, ফেরদৌস ও তার মা মরিয়ম উপস্থিত থেকে তাকে রিসিভ করে ভোলায় নিয়ে যান বলে জানান ওই তরুণী।
স্থানীয়রা জানান, দুজনের ভাষা ভিন্ন হওয়ায় মাঝে মাঝে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। চীনা ভাষা জানেন না ফেরদৌস বেগম আর বাংলা বোঝেন না লু চাঁওং। এ কারণে তাদের দুজনের মধ্যে যোগাযোগে কিছুটা অসুবিধা দেখা দেয়। তবে বিষয়টি তারা মোবাইলের গুগল ট্রান্সলেট ব্যবহার করে সামলে নিচ্ছেন।
ফেরদৌস বেগমের মা মরিয়ম বেগম জানান, প্রথমে মেয়ের কাছ থেকে জেনে আমরা ছেলে ও তার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বলেছি আমার মেয়ের বিদেশে কেউ নেই। অসুবিধা হলে সেখানে কে দেখবে। তখন তারা বলেছেন আপনাদের টেনশন নেই। তাই পরে আমি রাজি হয়েছি। এখন ছেলে আমাদের বাড়িতে আসছে।
আরও পড়ুন: প্রেমের টানে নয়, বোন ডেকেই রিতার কাছে ছুটে এলেন চীনের লি সুয়েজং
চীনা যুবক মুসলিম না হওয়ায় ফেরদৌসের পরিবার বিয়েতে রাজি হলেও আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে তারা স্থানীয় আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করছেন, এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন করবেন বলে জানান ফেরদৌস বেগমের মা মরিয়ম।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাহাদাৎ মো. হাচানাইন পারভেজ জানান, এক চীনা যুবক ভোলায় আসছে এটি আমাদের জানা আছে। তিনি বৈধভাবে বাংলাদেশে এসেছেন। তারপরও আমারা তাকে নজরদারিতে রেখেছি।
উল্লেখ্য, গত মে মাসে ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রপ্রসাদ গ্রামের ইলিয়াস হাওলাদারের মেয়ে নাবিয়া আক্তারের বাড়িতে আসেন চীনা যুবক ইরিছা চং। পরে ১০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে সম্পন্ন করে নাবিয়াকে চীনে নিয়ে যান ওই যুবক।

১ সপ্তাহে আগে
৪






Bengali (BD) ·
English (US) ·