এনামুলকে দলে নেয়ার ব্যাপারে সিমন্স বললেন, এটা আদর্শ পদ্ধতি নয়

৩ সপ্তাহ আগে
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গেলে হয়তো ফুরোবে না কখনও। একের পর এক ব্যর্থতা, সমস্যা যেন লেগেই থাকে জাতীয় দলের। ওপেনিং সমস্যা তো দীর্ঘদিনের। বছরের পর বছর এ নিয়ে কথা বললেও নেই কোনও সমাধান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট হেরেছে ব্যাটিং ব্যর্থতায়। তাইতো চট্টগ্রাম টেস্টের জন্য দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ডিপিএলে উড়তে থাকা এনামুল হক বিজয়কে।

এনামুল হক বিজয়ের টেস্ট দলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে দায়সারা ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক। তবে এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হেড কোচ ফিল সিমন্স। টেস্টের আগেরদিন বিজয়ের ওয়ানডে ফরম্যাটের পারফরম্যান্সে টেস্ট দলে চলে আসার বিষয়ে দেশের ক্রিকেট সিস্টেম নিয়েই হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি। এদিকে দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ভালো না হলেও, এখনই আশাহত হওয়ার মতো কিছু আছে বলে মনে করেন না ক্যারিবিয়ান বস। সমর্থকদের একটু ধৈর্য ধরার আহ্বান তার। 

 

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে সবচেয়ে সুখের চাকরিটা করেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। প্রধান নির্বাচক হয়েও দলের খারাপ পারফরম্যান্সের কোন আঁচ লাগেনা তার গায়ে। আগে তাও কোন ক্রিকেটার কেন দলে এসেছেন সেটার একটা ব্যাখ্যা পাওয়া যেতো নির্বাচকদের কাছ থেকে। কিন্তু এইসব ব্যাখ্যার ঊর্ধ্বে এখন গাজী আশরাফ হোসেন। গৎবাঁধা ভিডিও বার্তাতেই শেষ তার দায়িত্ব। 

 

সিলেট টেস্টে ভরাডুবির পর ওপেনিং পেয়ার নিয়ে যখন চারদিকে প্রশ্নের ঝড়। তখন এনামুল হক বিজয়কে ডেকে পাঠান নির্বাচকরা। ডিপিএলে উড়তে থাকা বিজয়কে দিয়ে কোনোরকমে একটা সমাধান খুঁজে নেয়ার চেষ্টা। কিন্তু ফিফটি ওভারের পারফরম্যান্সে কীভাবে একজন সাদা পোশাকে সুযোগ পায় নেই তার কোন ব্যাখ্যা। 

 

আরও পড়ুন: টেস্টে তানজিম সাকিবকে নিয়ে আশাবাদী সিমন্স

 

এতোদিন এটা নিয়ে কেউ কোন উচ্চবাচ্য না করলেও, এবার বিষয়টা নিয়ে নিজের হতাশা প্রকাশ করলেন টাইগার হেড কোচ ফিল সিমন্স। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট সিস্টেম এবং ক্যালেন্ডার নিয়েও অসন্তোষ জানিয়েছেন ক্যারিবিয়ান বস। 

 

টাইগারদের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স বলেন, ‘এটা কখনই আদর্শ উদাহরণ নয়। এভাবে কাউকে দলে নেয়া উচিত না। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট সিস্টেমটাই তো এমন। এখানে ঘরোয়া ক্রিকেটে সবার শেষে হয় লঙ্গার ভার্সন ম্যাচ। বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় ছেলেদের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করতে। তাই বিপিএল আর ডিপিএলের পারফরম্যান্স দিয়ে এখানে দল গোছানো হয়। আমাদের ওপেনিংয়ে সমস্যা আছে, তাই বিজয়কে নেয়া হয়েছে। কিন্তু এই প্রক্রিয়াটা আদর্শ নয়।’ 

 

বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ হিসেবে ৬ মাস হয়ে যাচ্ছে ফিল সিমন্সের। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত আপৎকালীন দায়িত্ব পালন করার পর এবার ২০২৭ পর্যন্ত চুক্তি ক্যারিবিয়ানের সঙ্গে। কিন্তু সিমন্সের অধীনে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স আহামরি নয়। জিম্বাবুয়ে সিরিজেও এখন পর্যন্ত পাশ মার্ক পাওয়ার মতো কিছুই করতে পারেন নি তিনি। 

 

সিরিজের আগে কোচ-ক্যাপ্টেন দুজনই শুনিয়েছিলেন নতুন শুরুর গল্প। কিন্তু মাঠে দেখা যায়নি তার ছিটেফোটাও। যে জিম্বাবুয়েকে বলে কয়ে হারাতো বাংলাদেশ, তাদের বিপক্ষেই সিলেটে রীতিমতো উড়ে গেলো টাইগাররা। চট্টগ্রাম টেস্ট নিয়েও তাই খুব একটা আশা করছেন না সমর্থকরা। তবে, এখনই হতাশ না হয়ে, ধৈর্য ধরার আহ্বান হেড কোচের। 

 

আরও পড়ুন: পহেলগাম হামলার দিনই হত্যার হুমকি পেয়েছিলেন গম্ভীর, একজন গ্রেফতার

 

সিমন্স বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকে বলবো, একটু ধৈর্য ধরুন। আমি জানি, এখানে ক্রিকেটের প্রতি মানুষের ভালোবাসা অনেক বেশি। এখানে ক্রিকেট নিয়ে মানুষের আবেগ কাজ করে। তবে আমি ধৈর্য ধরতে অনুরোধ করছি। ছেলেরা ঠিক কাজটা ঠিকভাবে করার চেষ্টা করছে। আমরাও কাজ করছি, যাতে সবকিছু ঠিকঠাক হয়। আমাদের একটু সময় দিন। ঠেকিয়ে ঠেকিয়ে ২০০ রান করার পক্ষে আমি না। যে পরিবর্তনের কথা বলেছি, তার জন্য কিছুটা সময় লাগবে।’ 

 

চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন এনামুল। এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ১৪ ম্যাচে ৪ সেঞ্চুরিতে ৮৭৪ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের এই ওপেনার। 

 

লাল বলেও এনামুল রান করেন নিয়মিত। গত জাতীয় ক্রিকেট লিগে ৭ ম্যাচে ৬৭.৩৭ গড়ে ৭০০ রান করেছিলেন। চার দিনের ম্যাচের ওই টুর্নামেন্টে তার চেয়ে বেশি রান ছিল মাত্র একজনের। এর আগে এই স্টেডিয়ামে একবারই জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। সে টেস্টে ১৮৪ রানে জিতেছিলো মুশফিকুর রহিমের দল।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন