রোববার (২৯ জুন) রাতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাসান মাহমুদ তারেক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, শাটডাউনের যৌক্তিক কোনো কারণ ছিল না। ভুল বোঝাবুঝির কারণে এসব হয়েছে। আমরা ব্যবসায়ীরা মধ্যস্থতা করব। আগামীতে যেন কোনো ধরনের সমস্যা না হয় সেটা নিয়ে সরকার আমাদের আশ্বস্ত করেছে।
আরও পড়ুন: এনবিআরের ৬ কর্মকর্তার দুর্নীতির অনুসন্ধানে দুদক
এর আগে বিকেলে এনবিআর কর্মীদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির মধ্যে অর্থ উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে বসেন ব্যবসায়ী নেতাদের দশ সদস্যের প্রতিনিধি দল। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং এনবিআর চেয়ারম্যান। জানা গেছে, বৈঠকে এনবিআর কর্মীদের কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়াদি তুলে ধরে সরকারের কাছে দ্রুত সমস্যা সমাধানের দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
এদিকে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাঁচ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে পাঁচ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিদ্যমান সংকট দ্রুত নিরসনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এ কমিটির বিস্তারিত টার্মস অব রেফারেন্স সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: এনবিআরের আন্দোলনরতদের অনতিবিলম্বে কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ
এর আগে এনবিআরের সংকট নিয়ে এক বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, অনতিবিলম্বে এনবিআরের আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সংস্কারের বিরোধিতা ছাড়াও অর্থ বছরের শেষ ২ মাসে তারা রাজস্ব আদায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করেছেন। এ তথাকথিত আন্দোলন পরিকল্পিত ও দুরভিসন্ধিমূলক যা জাতীয় স্বার্থ এবং নাগরিক অধিকারের চরম পরিপন্থি।
সরকারের পক্ষ থেকে রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের দাবি বিবেচনায় নেয়ার সুস্পষ্ট ঘোষণা দেয়া হয় এবং আলোচনায় আসার আহ্বান জানালেও তারা তা অগ্রাহ্য করেন। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার গ্রহণযোগ্য সমাধান না করে তারা আন্দোলনের নামে অনমনীয় অবস্থান নিয়ে ক্রমাগত দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করে চলেছে বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে।
আরও পড়ুন: এনবিআর সংকট সমাধানে ৫ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গঠন
এ পরিস্থিতিতে, অতি জরুরি আমদানি-রফতানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সকল কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহের সকল শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস (Essential Services) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আমরা আশা করি, অনতিবিলম্বে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে।
]]>