সিলেটে প্রথম টেস্ট জিম্বাবুয়ের কাছে বাজেভাবেই হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে চট্টগ্রামে এসেই যেন ঘুরে দাঁড়াল টাইগাররা। আগের ম্যাচ ব্যাটিং ব্যর্থতায় হারলেও এ ম্যাচে ব্যাটে-বলে সমানতালে ঝলক দেখিয়েছেন তাইজুল-মিরাজ-সাদমানরা। মিরাজের স্পিন ঘূর্ণিতে তৃতীয় দিনের শেষ সেশনেই জিম্বাবুয়েকে ১১১ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। আর তাতেই বাংলাদেশের ইনিংস ব্যবধানে জয়।
দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে ব্যাটিং ধস থামিয়ে তৃতীয় দিনটা ভালোই শুরু করে টাইগাররা। প্রথম সেশনে মিরাজ অর্ধশতক তুলে নিয়েছিলেন। আর দ্বিতীয় সেশনে তিনি তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক।
এছাড়া তানজিম সাকিবের ৪১ এবং তাইজুল ইসলামের ২০ রান বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহ এনে দিতে সহায়তা করে। মিরাজ আজ (৩০ এপ্রিল) টেস্টে ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস খেলেছেন। এর আগে ১০৩ রান ছিল তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। বুধবার (৩০ এপ্রিল) ১০৪ রানে মাসেকাসের বলে আউট হয়েছেন টাইগার এই অলরাউন্ডার।
আরও পড়ুন: সাকিব ও সোহাগ গাজীর বিরল রেকর্ডে ভাগ বসালেন মিরাজ
এদিকে জিম্বাবুয়ের হয়ে টেস্টে অভিষেকেই ৫ উইকেট শিকার করেছেন ভিন্সেন্ট মাসেকাসে। জিম্বাবুয়ের এই স্পিনার ৩১.২ ওভার বল করে ১১৫ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। বাকি চার বোলার নিয়েছেন একটি করে উইকেট। একটি রান আউট হয়েছে।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২২৭ রানে অলআউট হয় সফরকারী জিম্বাবুয়ে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু পায় স্বাগতিকরা। দুই ওপেনার সাদমান ও এনামুল হক বিজয়ের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ১১৮ রান। সাদমান-মিরাজের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৪৪৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। আর তাতেই ২১৭ রানের বড় লিড পায় টাইগাররা।
২১৭ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে ব্যাটিং শুরু করে জিম্বাবুয়ে। তবে এক সেশনেই তাদেরকে ধসিয়ে দিয়ে দারুণ এক জয় তুলে নিল বাংলাদেশ। বল হাতে প্রথম উইকেটটা এনে দেন আগের ইনিংসে ৬ উইকেট পাওয়া তাইজুল ইসলাম। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের আঘাত। ১৬ বলে ৬ রান করে ফেরেন বেনেট। নিক ওয়েলচ ফেরেন ২ বলে শূন্য রান করে।
স্কোরবোর্ডে ৮ রান তুলতেই টপ-অর্ডারের দুই ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়ে সফরকারীরা। সেই চাপ আরও বেড়ে যায় সেন উইলিয়ামস আউট হওয়াতে। নাঈম হাসানের বলে সাদমানের ক্যাচ হয়ে ফেরেন ১৭ বলে ৭ রান করা এই ব্যাটার। ২২ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে।
আরও পড়ুন: মিরাজের দ্বিতীয় শতক, স্পর্শ করলেন এক মাইলফলক
চতুর্থ উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন ক্রেইগ আরভিন ও বেন কারান। তাদের জুটি থেকে আসে ৪৭ রান। আরভিন আউট হলে ভাঙে তাদের এই জুটি। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে সরাসরি বোল্ড আউট হয়ে ফেরেন এই ব্যাটার।
এরপর বাকি ব্যাটাররা যোগ দেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। শেষ ৩১ রান তুলতেই আউট হন বাকি ৬ ব্যাটার। মাধেভেরে ফেরেন শূন্য রানে। মাসাকাদজার ব্যাট থেকে আসে ১০ রান। বেন কারান করেন ১০৩ বলে ৪৬ রান। ক্রেইগ আরভিনে ২৫ ও মাসাকাদজার ১০ রান ছাড়া বাকিরা কেউ দুই অঙ্কের ঘর ছুঁতে পারেননি। শেষ উইকেট জুটিতে মুজারাবানিকে নিয়ে ১১ রানের জুটি গড়েন মাসেকেসা। শেষ পর্যন্ত ১১ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ নিয়েছেন ৫ উইকেট। আগের ইনিংসে কোনো উইকেটশূন্য ছিলেন মিরাজ। আর তাইজুল এই ইনিংসে শিকার করেছেন ৩ উইকেট। প্রথম ইনিংসে তাইজুল নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। এছাড়া দ্বিতীয় ইনিংসে নাঈম হাসান নিয়েছেন ১ উইকেট। আগের ইনিংসে তার শিকার ছিল ২ উইকেট।