ঊর্ধ্বগতির বাজারে ভালো নেই আব্দুল মজিদরা

৩ সপ্তাহ আগে
ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত ১২টা ছুঁই ছুঁই। খুলনা মহানগরীর তেঁতুল তলা মোড়ের পাশে সড়কের ধারে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। হঠাৎ নজর পড়ে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তির দিকে, যিনি রিকশা রেখে তার মধ্যে কিছু খুঁজে খুঁজে বড় একটি পলিথিনে রাখছেন।

সালাম দিয়ে কেমন আছেন জানতে চাইলে মুখে ভালো থাকার কথা বললেও চোখমুখে থাকা বিষাদের ছায়াতে সহজেই অনুমেয় খুব বেশি ভালো নেই তিনি। বলছিলাম রিকশাচালক মো. আব্দুল মজিদের কথা।

 

মজিদ জানান, ‘বয়স ৫০ পেরিয়েছে। ছোট বেলায় হাতে তুলে নিয়েছিলাম তিন চাকার বাহন রিকশা। ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে রিকশা চালিয়েই সংসার চালাচ্ছি। দীর্ঘদিন পায়ে চালিত রিকশা চালালেও বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করেছে।’

 

তাই প্রতিদিন ৩০০ টাকা ভাড়া দিয়ে এখন ব্যাটারি চালিত রিকশা চালান আব্দুল মজিদ। তিনি বলেন, ‘দিনে ভাড়া বাদ দিয়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় হয়। তবে ঊর্ধ্বগতির বাজারে ৫ সদস্যের সংসার এই আয়ে চলে না। তাই প্রতি রাতে নগরীর বিভিন্ন ময়লার স্তূপ থেকে বোতল, দুধের কৌটা, প্যাকেট সংগ্রহ করি।’

 

আরও পড়ুন: আগস্টে অস্বস্তি বেড়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে

 

এসব সংগ্রহ করে কি করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমিয়ে জমিয়ে মাসে এক থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করি। সেই টাকা দিয়ে কখনো চাল, আবার কখনো দেড় হাজার টাকা ঘর ভাড়া দেই।’

 

আব্দুল মজিদ আরও বলেন, ‘প্রতিদিন বাজার করতে দুই থেকে তিনশ টাকা চলে যায়। প্রতিদিন একই রকম আয়ও হয় না। মহাজনরে ভাড়ার টাকা দিয়ে যা থাকে তা দিয়ে এই বাজারে চলা যায় না।’

 

তবে জীবন চক্রকে নিয়তি হিসেবেই মেনে নিয়েছেন তিনি। মজিদ বলেন, ‘চাল-ডাল আর সামান্য তরকারি কিনতেই রোজগার শেষ হয়ে যায়। নাতি কখনো একটু মাছ-মাংস খেতে চাইলেও দিতে পারিনা। তখন একটু খারাপ লাগে।’

 

পায়ে চালিত রিকশাই ভালো ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগে তো এত রিকশাও ছিল না। তখন আয়ও মোটামুটি হত, আবার শরীরও সুস্থ থাকত। এখন শহরে এত বেশি রিকশা যে আয় দিন দিন কমছে। অনেকেরই  আমার মত করুণ অবস্থা। তারপরেও এভাবেই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন