উপকূলে গর্ভপাতের হার বেশি, কারণ কী?

১ সপ্তাহে আগে
তানিয়া আক্তার, বয়স ১৭। বিয়ে করেছেন বছর খানেক আগে। এখনও চোখে-মুখে শৈশবের চঞ্চলতা। তানিয়ার স্বামী রাকিবের বয়স ২০ বছর। বিয়ের বছর খানেকের মাথায় সন্তান সম্ভবা হয় তানিয়া। তবে গর্ভের বাচ্চা পৃথিবীর আলো দেখার সুযোগ পায়নি। তিন মাস না হতেই ঘরেই মৃত সন্তান প্রসব করে তানিয়া। শুরু থেকেই ডাক্তারের কাছে যায়নি সে!

সেই ঘটনার পর আবারও গর্ভধারণ করেছে তানিয়া। তবে এবার শুরু থেকেই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে আছে। প্রয়োজনীয় ওষুধের পাশাপাশি খাবার গ্রহণেও নিচ্ছে বাড়তি সতর্কতা।

 

কিছুটা একইরকম ঘটনা ঘটেছে রাশেদা বেগমের জীবনে। গর্ভধারণের কয়েক মাসের মাথায় প্রথম সন্তান ভূমিষ্ঠের আগেই গর্ভপাত ঘটে তারও।

 

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় সমুদ্র ঘেঁষা গ্রাম ফাইল্লাপাড়ার বাসিন্দা তানিয়া ও রাশেদা। এ গ্রামের বাসিন্দাদের বছর জুড়েই বসবাস নোনাপানির সঙ্গে।

 

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) বলছে, বঙ্গোপসাগর ঘেঁষা গ্রামগুলোতে অকাল গর্ভপাতের হার তুলনামূলক বেশি। এই অঞ্চলে শিশুমৃত্যুর অন্যতম কারণ নোনাপানি।

 

দেশে যেখানে এক হাজার শিশুর মধ্যে বিভিন্ন কারণে মারা যায় ৪৫ জন সেখানে কক্সবাজারের চকরিয়ায় সমুদ্র ঘেঁষা নিচু এলাকায় এ সংখ্যা ৬০ জনে।

 

আরও পড়ুন: মাতৃদুগ্ধ পান থেকে বঞ্চিত ৪৫ শতাংশ নবজাতক: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

 

আইসিডিডিআরবি গবেষক মানজুর আহমেদ হানিফি বলেন, ‘গর্ভবতীরা যদি বেশিপরিমাণ লবণ খায়, তাহলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে। জলবায়ুর প্রভাবে এ ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে।’

 

অবশ্য ভিন্ন কথা বলছেনমিডফোর্ড হাসপতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সোহানা আশকারী সৃষ্টি। তিনি বলেন, ‘উপকূলীয় নারীদের গর্ভপাতের অন্যতম বিরুপ আবহাওয়া ও অসচেতনতা। লবণ গর্ভধারণে কীভাবে সরাসরি ক্ষতি করছে তা নিয়ে আরও গবেষণা দরকার। তবে গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিডের অভাব হলে বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি হয়। এছাড়া ভাইরাস, আনকন্ট্রোল ডায়াবেটিস, আনকন্ট্রোল থাইরয়েড এবং ব্যকটেরিয়াও রয়েছে, যেটা গর্ভাপাতে মডিফাই করে।’

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জলবায়ু বা প্রকৃতির ওপর সরাসরি মানুষের কোনো হাত নেই তবে সচেতন থাকলে অনেক বিপদ এড়ানো সম্ভব। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত ঠেকাতে যেমন কাজ করতে হবে সরকার ও রাষ্ট্রকে তেমনি পারিবারিক পর্যায়েও বাড়তি নজরদারি নিতে হবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন