‘উনি আমার মা, জীবনেও আমি আর ভিডিও করবো না।’

৩ সপ্তাহ আগে
রাজবাড়ীতে মোবাইলে প্রবাসীর স্ত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণের অভিযোগ দিয়ে ভ্যানচালক রুপল শেখকে (৩০) পিটিয়ে হত্যার ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ সময় সংবাদের হাতে এসেছে।

৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, রুপলকে ঘরের ফ্লোরের ওপর বসিয়ে রশি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে কাঠের বাটাম দিয়ে পেটানো হচ্ছে। তার দুই পা ও ডান হাত দিয়ে রক্ত ঝরছে। রুপল চিৎকার করে বলছেন, ‘উনি আমার মা, আমি আর জীবনেও ভিডিও করবো না।’


শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে তাকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলে চার আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


তারা হলেন- রাজাপুর গ্রামের রুকমান বিশ্বাসের ছেলে জহিরুদ্দিন বিশ্বাস (৬৫), মৃত ফেলু বিশ্বাসের ছেলে মৈজদ্দি বিশ্বাস (৫৫), ফরহাদ বিশ্বাস (৪৫) ও আব্দুল খালেক মোল্লার ছেলে ও মুন্নু মোল্লা (৫০)।


আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যা


নিহত রুপল রাজাপুর গ্রামের জিন্নাত শেখের ছেলে। তিনি ভ্যান চালিয়ে ও শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার সাত বছর ও দুই বছর বয়সী দুই মেয়ে রয়েছে।


রুপলের বাবা জিন্নাত শেখ বলেন, ‘রাজাপুর গ্রামের শামের ছেলে প্রবাসী রাকিবুলের স্ত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণের অভিযোগ দিয়ে গত মঙ্গলবার (১৩ মে) রাকিবুলের ভাই রাফিজুল ও তার পরিবারের লোকজন আমার ছেলে রুপলকে মারধর করেন। তবে আমার ছেলের মোবাইল চেক করে তারা কোনো ভিডিও পায়নি। সেদিন মার খেয়ে পরদিন বুধবার সকালে রুপল ঢাকা চলে যান। এরপর স্থানীয় মাতব্বররা বিষয়টি শালিসের মাধ্যমে সমাধান করে দেয়ার আশ্বাস দিলে রুপলের মা ফোন করে তাকে ঢাকা থেকে বাড়ি আনেন।’


তিনি আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ি আসেন রুপল। শুক্রবার সন্ধ্যার পর বিষয়টি নিয়ে রাফিজুলদের বাড়িতে সালিশ হওয়ার কথা ছিল। তবে সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে রাফিজুল, রাসেল, সৌরভসহ সাত থেকে আটজন এসে রুপলকে ঘরের ভেতর থেকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যান। রুপলকে রাফিজুলদের বাড়িতে নিয়ে ঘরের মধ্যে আটকে বেধড়ক মারধর করে হাড়গোড় ভেঙে দিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর মৃত অবস্থায়ই তারা রুপলকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যান।’


আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় কুপিয়ে বেঁধে রাখা ব্যবসায়ীকে হাসপাতালে পাঠাল পুুলিশ


রুপলের মা রাবেয়া বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলের দুটি শিশু সন্তান রয়েছে। তাদের এখন কি হবে? আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’


রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান জানান, শনিবার রূপলের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই রুপলের মামা কালাম মোল্লা বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭ থেকে ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। শনিবার ভোরে মামলার চার আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। অন্য অসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। 
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন