ঈদের আগে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির শঙ্কা কতখানি?

১ দিন আগে
সিডরের ভয়াবহতা মনে আছে নিশ্চয়ই। দেশের ইতিহাসের অন্যতম প্রলয়ঙ্কারী এ ঝড় আজও দাগ কেটে আছে উপকূলবাসীর মনে। ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন বাসিন্দারা। ভোলা সাইক্লোন থেকে শুরু করে সবশেষ রিমাল পর্যন্ত, সবগুলো প্রাকৃতিক প্রলয় লন্ডভন্ড করেছে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনজীবন। এসবের ক্ষত না শুকাতেই আবারও শঙ্কার কালো মেঘ ভর করছে উপকূলবাসীর ওপর।

ঝড়বৃষ্টি প্রবণ মাস হিসাবে ধরা হয় মে-জুনকে। সবশেষ বয়ে যাওয়া সাতটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে পাঁচটিই ছিল মে মাসে। তবে চলতি মে মাসে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ভারি বৃষ্টিপাত হলেও ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা নেই। এমনকি ঈদুল আজহার সময়েও এমন আশঙ্কা নেই।  

 

গত ২৬ মে ফেসবুকে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এমন বার্তা দিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।

 

তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা নাই বললেই চলে। যেহেতু বর্ষার মৌসুমি বায়ু এরইমধ্যে উত্তর বঙ্গোপসাগরে পৌঁছে গেছে। ২৬ মে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে পাওয়া সবশেষ পূর্বাভাস অনুসারে আগামী ২৭ কিংবা ২৮ মে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপকূলে একটি লঘুচাপ বা নিম্নচাপ সৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।

 

সম্ভাব্য লঘুচাপ বা নিম্নচাপের প্রভাবে বাংলাদেশের রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলো এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে আগামী ২৯, ৩০, ও ৩১ মে এবং ১ জুন রেকর্ড পরিমাণে বৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। এই ছয় দিনে বাংলাদেশের ও ভারতের আসাম, ও মেঘালয় রাজ্যের ওপর ৫০০-৭০০ মিলিমিটারের বেশি পরিমাণ বৃষ্টি হতে পারে।

 

অতি ভারি বর্ষণ কোন বিভাগের ওপর হবে তা নির্ভর করছে লঘুচাপ বা নিম্নচাপটি ঠিক উপকূলের কোন স্থানের ওপর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে ও ঠিক কত ধীরে স্থলভাগের ওপর দিয়ে অতিক্রম করবে। যদি খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে প্রবেশ করে তবে ভারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রংপুর বিভাগ ও ময়মনিসংহ বিভাগে। যদি বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের ওপর দিয়ে প্রবেশ করে তবে ভারি বৃষ্টি হবে চট্টগ্রাম বিভাগ ও সিলেট বিভাগে। 

 

আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ঝড়, অতিভারি বৃষ্টিতে বন্যার শঙ্কা ফেনী-কুমিল্লায়

 

তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে পাওয়া পূর্বাভাস অনুসারে লঘুচাপ বা নিম্নচাপটি খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে সরাসরি উত্তর-পূর্ব অগ্রসর হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম রাজ্যে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে। এই পূর্বাভাস অপরিবর্তিত থাকলে রংপুর বিভাগে বন্যার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। 

 

গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, গেল ছয়বছরে ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৭০ জন। তাই চলতি মাসে ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা না থাকলেও সরকারের নীতিমালাকে কেবল কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ না রেখে, যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলেই এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক কাসনীম চৌধুরী ফাহিম।

 

তিনি বলেন, ‘আমাদের এখনও প্রায় ৭ হাজার সাইক্লোন শেল্টারের প্রয়োজন রয়েছে। তবে নীতিমালার প্রয়োগ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এ ক্ষেত্রে নীতিমালার প্রয়োগটা অনেক জরুরি।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন