১. তাকবিরে তাশরিক বলা
সময় ৯ জিলহজ ফজর থেকে ১৩ জিলহজ আসরের পর পর্যন্ত প্রতি ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক বলা। আল্লাহ তাআলা বলেন, তুমি তাদেরকে আল্লাহর দিনসমূহ স্মরণ করাও। (সুরা ইবরাহিম: ৫)
ইবনু আবি শাইবা ও বায়হাকি থেকে বর্ণিত كان عليّ رضي الله عنه يُكبّر من صلاة الفجر يوم عرفة إلى صلاة العصر من آخر أيام التشريق ৯ জিলহজ আরাফার দিন ফজর থেকে শুরু করে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর তাকবির পড়তেন। (ইবনু আবি শাইবা: ২/১৫৬)
আরও পড়ুন: হাজিদের বরণে প্রস্তুত মিনা
তাকবির
اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، وَلِلَّهِ الْحَمْدُ আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
২. ঈদের নামাজ আদায় করা
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে মুসাল্লায় (প্রাঙ্গণে) ঈদের নামাজ পড়তেন। (সহিহ বুখারি: ৯৫৬, সহিহ মুসলিম: ৮৮৯) তাই ইদগাহে নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব।
ঈদের নামাজ ফরজ নয়, তবে ওয়াজিব।
৩. গোসল করা, সুগন্ধি ব্যবহার ও উত্তম পোশাক পরিধান করা রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদের দিন গোসল করতেন। (ইবনু মাজাহ: ১৩১৫)
ঈদের সুন্নত:
১. ইদের নামাজের পূর্বে গোসল করা
২. সুন্দর কাপড় পরিধান করা
৩. সুগন্ধি ব্যবহার করা
৪. কোরবানি করা (উদ্বিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য)
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ অতএব, তোমার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় করো ও কোরবানি করো। (সুরা কাউসার: ২) রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি কোরবানির সামর্থ্য রাখে, কিন্তু কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। (ইবনু মাজাহ: ৩১২৩) কোরবানি করা ঈদের দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমল। এটি মুস্তাহাব নয়, বরং সামর্থ্যবানদের জন্য ওয়াজিব।
৫. ঈদগাহে যাওয়ার আগে কিছু না খাওয়া (ইদুল আজহার দিন) রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিন খেজুর খেয়ে ঈদের নামাজে যেতেন, কিন্তু ঈদুল আজহার দিন ইদের নামাজের পর কোরবানির গোশত খেতেন। (তিরমিজি: ৫৪২)
৬. হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া ও ফিরে আসার সময় ভিন্ন রাস্তা ব্যবহার করা। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদের দিন হেঁটে ঈদগাহে যেতেন এবং ভিন্ন পথ দিয়ে ফিরে আসতেন। (ইবনু মাজাহ: ১৩১৪, তিরমিজি: ৫৪১)
৭. আল্লাহর জিকির ও তাসবিহ বেশি বেশি পড়া لِيَشْهَدُوا مَنَافِعَ لَهُمْ وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَعْلُومَاتٍ যেন তারা আল্লাহর নির্ধারিত কয়েকটি দিনে তাঁর নাম স্মরণ করে। (সুরা হজ: ২৮) এই দিনগুলোতে (১০-১৩ জিলহজ) বেশি বেশি করে আল্লাহর নাম স্মরণ করা, দুআ করা, তাসবিহ, তাহমিদ, তাকবির পড়া সুন্নাত।
আরও পড়ুন: আত্মহত্যা নিয়ে ইসলাম কী বলে
সংক্ষিপ্ত আকারে মুস্তাহাব আমলের তালিকা
১. তাকবিরে তাশরিক পড়া
২. ঈদের নামাজ আদায়
৩. গোসল ও উত্তম পোশাক পরা
৪. ঈদের নামাজের আগে কিছু না খাওয়া
৫. কোরবানি করা
৬. হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া
৭. ভিন্ন পথে ফেরা
৮. আল্লাহর জিকির বৃদ্ধি করা
৯. প্রতিবেশীর খোঁজখবর নেওয়া
১০. কোরবানিরকৃত পশুর গোশত এক তৃতীয়াংশ গরীব দুঃখীদের মাঝে বন্টন করা
ঈদুল আজহার দিনটি আনন্দ ও উৎসবের পাশাপাশি তাকওয়া, ইবাদত ও আত্মত্যাগের প্রতীক। এ দিনে মুস্তাহাব আমলগুলো যথাযথভাবে পালন করলে একজন মুমিন আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে এবং ইদের প্রকৃত ফজিলত অর্জন করতে সক্ষম হয়।
]]>