ইয়েমেনে ইসরাইলের ব্যাপক বিমান হামলা

২ সপ্তাহ আগে
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের দখলে থাকা বন্দর নগরী হোদেইদায় ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বিমান বাহিনী। তেল আবিবে ইসরাইলের প্রধান বিমানবন্দর বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে সোমবার (৫ মে) এই হামলা চালানো হয়। ইসরাইলি বাহিনী হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় ইসরাইলি বিমান বাহিনীর অন্তত ২০টি যুদ্ধবিমান ইয়েমেনের উপকূলীয় এলাকায় হামলা চালায়। হামলার অন্যতম লক্ষ্য ছিল হোদেইদা বন্দর ও নিকটবর্তী শহর বাজিলের (ইসরাইল থেকে দুই হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত) একটি সিমেন্ট কারখানা।

 

আইডিএফ আরও জানিয়েছে, যুদ্ধবিমানগুলো থেকে ৫০টি বোমা কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। হামলার প্রস্তুতি ও হামলার ভিডিওও প্রকাশ করেছে ইসরাইলি বিমান বাহিনী। যুদ্ধবিমানের সঙ্গে এই অভিযানে জ্বালানি বিমান ও গোয়েন্দা বিমানও অংশ নেয়।

 

আইডিএফের দাবি, হুতিরা ‘সামরিক চাহিদা পূরণ ও জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে ইরান থেকে আসা অস্ত্র’ চোরাকারবারের কাজে হোদেইদা বন্দর ব্যবহার করে আসছিল। বাজিল সিমেন্ট কারখানা ‘হুতিদের জঙ্গি কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক উপাদান হিসেবে কাজ করে এবং এখান থেকে উৎপাদিত সিমেন্ট ব্যবহার করে সুড়ঙ্গ ও অন্যান্য সামরিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়।’ 

 

আরও পড়ুন: গাজায় অভিযান জোরদার করতে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তর করা হবে: নেতানিয়াহু

 

গাজায় হামাস-ইসরাইল সংঘাত শুরু হওয়ার পর ইয়েমেনে এটা ইসরাইলের ষষ্ঠ ও চলতি বছরের জানুয়ারির পর প্রথম বিমান হামলা। কয়েক মাস আগে যুক্তরাষ্ট্র হুতির বিরুদ্ধে বড় আকারে বিমান হামলা শুরুর পর ইসরাইল হুতিদের হামলার জবা দেয়া বন্ধ রেখেছিল।

 

ইসরাইলি কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, এই হামলার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে নেয়া হয়েছিল। তবে এটা কোনো যৌথ কার্যক্রম ছিল না। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে উভয় অবস্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির নিদর্শন দেখা গেছে।

 

ইসরাইলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ ও আইডিএফের চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামিরকে অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই অভিযান সরাসরি তদারক করেন।

 

এ সময় তারা তেল আবিবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে অবস্থিত ইসরাইলি বিমান বাহিনী তথা আইএএফের ভূগর্ভস্থ সদর দফতরে ছিলেন। পরে ইসরাইলি বিমান বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল টোমার বারও তাদের সঙ্গে যোগ দেন। তিনি অন্য একটি নিয়ন্ত্রণ পোস্টে ছিলেন।

 

আরও পড়ুন: ইসরাইলি মন্ত্রিসভায় ‘পুরো গাজা’ দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন

 

হুতি নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় সিমেন্ট কারখানার অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও ৩৯ জন আহত হয়েছেন। হামলার প্রতিক্রিয়ায় হুতি কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরাইলের এই হামলা তাদেরকে দমাতে পারবে না। এই হামলার উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে।

 

সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্ট হুতি গণমাধ্যম কার্যালয়ের প্রধান নাসরুদ্দিন আমের বলেন, ‘ইসরাইলি হামলায় হুতিরা দমবে না। বেসামরিক অবকাঠামোর বিরুদ্ধে জায়নবাদি ও মার্কিনিদের আগ্রাসী হামলা জায়নবাদি শত্রুদের বিরুদ্ধে আমাদের সামরিক অভিযানে কোনো প্রভাব ফেলবে না।’

 

গত রোববার (৪ মে) ইয়েমেন থেকে ধেয়ে আসা একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের তিন নম্বর টার্মিনালের প্রবেশ পথের একদম কাছে সরাসরি আঘাত হানে। এটাই হুতি ক্ষেপণাস্ত্রের ইসরাইলের বিমানবন্দরের এত কাছে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার প্রথম ঘটনা।

 

মার্কিন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাড ও ইসরাইলের নিজস্ব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা অ্যারো ও আইরন ডোমও এই হামলা ঠেকাতে পারেনি। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানবন্দরে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে ছয়জন আহত হন। বিমানবন্দরে বেশ খানিকক্ষণ বিমান চলাচল বন্ধ থাকে। বেশ কিছু আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স সাময়িক ফ্লাইট বন্ধ রাখে।

 

আরও পড়ুন: ইরানের হাতে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র, আঘাত হানতে সক্ষম ১২০০ কিমি দূরেও!

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন