ইসলামিক ফিন্যান্স সামিটে এক মঞ্চে বিশ্বের অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা

দেশের ইসলামিক ফিন্যান্স খাতকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে আয়োজিত বাংলাদেশ ইসলামিক ফিন্যান্স সামিট–২০২৫ সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল শেরাটনে এ সামিট অনুষ্ঠিত হয়।

 

আইএফএ কনসালটেন্সির আয়োজনে এবং আন্তর্জাতিক শরিয়াহ মানদণ্ডপ্রণয়নকারী সংস্থা অ্যাওফি (বাহরাইন)-এর সহযোগিতায়, সিটি ইসলামিকের উপস্থাপনায় ও অ্যারিস্টোফার্মা লিমিটেডের সমর্থনে এই সামিট অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশি-বিদেশি নীতিনির্ধারক, শরিয়াহ বিশেষজ্ঞ, বিনিয়োগকারী ও ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টদের মিলনমেলা দেখা যায়।

 

সামিটের মূল প্রতিপাদ্য ছিল, Overcoming the Challenges in the Islamic Finance Industry in Bangladesh 2.0। বক্তারা বলেন, ইসলামি ফিন্যান্সের প্রসারে কৌশলগত উদ্যোগ ও সুশাসনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে নতুন মূল্য সংযোজন সম্ভব।

 

তারা উল্লেখ করেন, পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে ইসলামি ব্যাংকিং খাতে যে নানাবিধ সংকট তৈরি হয়েছিল—সেখান থেকে উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষার কৌশল নির্ধারণ জরুরি। এই সামিটে ঠিক সেই পথরেখাই তুলে ধরা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন: ইসলামিক ফিন্যান্সের ভিত্তি সুদৃঢ় করতে ঢাকায় বসছে নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের সামিট

 

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ফাইন্যান্স সামিট অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিনটি কিনোট স্পিচ ও চারটি প্যানেল আলোচনার মাধ্যমে শরিয়াহ গভর্নেন্স, সুকুক, ইসলামিক পুঁজি বাজার, ফিনটেক ও এআই–এর চ্যালেঞ্জ ও সমাধান নিয়ে গভীর আলোচনা হয়।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মানসুর। তিনি বলেন, অ্যাওফির মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার শরিয়াহ, অডিট ও হিসাব–মানদণ্ড অনুসরণ ছাড়া সঠিক ইসলামি ব্যাংকিং পরিচালনা সম্ভব নয়।

 

মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, বাহরাইন ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ইসলামি ফাইন্যান্স বিশেষজ্ঞরাও এই সামিটে অংশ নেন। তারা জানান, বাংলাদেশ অদূর ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ার ইসলামিক ফিন্যান্সের আঞ্চলিক কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।

 

বক্তারা আরও বলেন, ইসলামিক ফাইন্যান্স কোনো সাধারণ ফাইন্যান্স নয়,এটি একটি নৈতিক, শরিয়াহ–সম্মত ও কল্যাণচিন্তামূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। তাই এই খাতের উন্নয়ন মানেই দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান।

 

সামিটে ঘোষণা করা হয়, আইএফএ কনসালটেন্সি ও আদল অ্যাডভাইজরি যৌথভাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রফেশনাল এক্সটার্নাল শরিয়াহ অডিট সার্ভিস প্রদান শুরু করবে। এতে ইসলামী আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও শরিয়াহ সুশাসন আরও জোরদার হবে।

 

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ আয়োজন বাংলাদেশের ইসলামিক ফিন্যান্স খাতকে আরও গতিশীল করবে এবং বিশ্বমানের সাথে সংযুক্ত একটি নৈতিক আর্থিক ব্যবস্থার দ্বার উন্মুক্ত করবে।

]]>