ইশরাক নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফজিলত

১ দিন আগে
ইশরাক শব্দের অর্থ হলো আলোকিত হওয়া। সূর্য পরিপূর্ণভাবে উদিত হওয়ার পর ইশরাকের নামাজ আদায় করতে হয়। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করতেন।

সূর্য উদয়ের পর যে ২ বা ৪ রাকাত নফল নামাজ পড়া হয় তাকে ইশরাকের নামাজ বলে। এ নামাজের মাধ্যমে এক হজ ও ওমরাহর সওয়াব পাওয়া যায়। এই নামাজের মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয়। এই নামাজ অনেক নেক আমলের জন্য যথেষ্ট হয়।

 

আরও পড়ুন: দিনের শুরুতে যেসব আমলে নিরাপদ থাকবেন

 

রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্যোদয়ের পর এই দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। অন্যদেরও আদায় করতে উৎসাহিত করেছেন। 

 

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 

 

যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করল, সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকিরে বসে থাকল; অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করল, সে একটি পরিপূর্ণ হজ ও ওমরাহর সওয়াব পাবে। (তিরমিজি ৫৮৬)

 

ইশরাকের সময়

 

ইশরাকের উত্তম সময় হলো, বেলা ওঠার এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে পড়ে নেওয়া। চাশত বা দোহার নামাজ আদায় করতে হয় সূর্য মধ্য আকাশে স্থির হওয়ার আগ মুহূর্তে। চাশত বা দোহা পৃথকভাবে আদায় করার অবকাশ থাকলেও অনেকেই এটাকে ইশরাকের নামাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা বলেছেন, সময়ের শুরুতে আদায় করলে সেটা ইশরাক আর সময়ের শেষে আদায় করলে দোহা।

 

ইশরাক অর্থ হলো আলোকিত হওয়া উজ্জ্বল হওয়া বা সূর্য উদিত হওয়ার পরে এই নামাজ পড়তে হয়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এই নামাজ পড়তেন না কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেন তারপর এই নামাজ পড়তেন। ইশরাকের নামাজ পড়ার সময় নিয়ে কেউ কেউ বলেছেন সূর্য ওঠার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর এই নামাজ পড়া উত্তম আবার অনেকে বলেছেন, সূর্য উঠার ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর এই নামাজ পড়া উত্তম। আর ইশরাকের  নামাজ পড়ার শেষ  সময় হল , সূর্য এক বর্শা পরিমাণ মধ্য আকাশে উদিত হওয়া পর্যন্ত ইশরাকের নামাজ পড়া যায় এক বর্শা সমান হল দেড় মিটারের মত।

 

হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, 

 

আমার প্রিয়তম রসুল সা. আমাকে তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন, যেন আমি তা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ত্যাগ না করি। প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, দুহার নামাজ ও ঘুমানোর আগে বিতর আদায় করা। (বুখারি ১১৭৮)

 

ইশরাকের নামাজের ফজিলত

 

হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করল এবং সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকিরে বসে থাকল; তারপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করল, সে একটি পরিপূর্ণ হজ ও ওমরার সওয়াব পাবে।’ (তিরমিজি ৫৮৬)

 

অন্য হাদিসে আছে ‘মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড়া আছে। অতএব, মানুষের কর্তব্য হলো প্রত্যেক জোড়ার জন্য একটি করে সদকা করা। সাহাবায়ে কেরাম বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! কার শক্তি আছে এই কাজ করার?’ তিনি বলেন, ‘মসজিদে কোথাও থুতু দেখলে তা ঢেকে দাও অথবা রাস্তায় কোনো ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও। তবে এমন কিছু না পেলে, চাশতের দুই রাকাত নামাজ এর জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ ৫২২২) এ হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, চাশতের নামাজ ৩৬০ সদকার সমতুল্য।

 

কাজের কোনো ফাঁকে সম্ভব হলে চাশতের নামাজ পড়ে নেওয়া উত্তম। চাশতের নামাজ দুই বা চার রাকাত। চার রাকাত পড়াই উত্তম। এর নিয়মও সাধারণ নফল নামাজের মতো। সূর্য এক-চতুর্থাংশ ওপরে উঠলে, গ্রীষ্মকালে ৯টা-১০টা, আর শীতকালে ১০টা-১১টার সময় সাধারণত তা আদায় করা হয়।

 

আরও পড়ুন: সুরা যিলযালে ভূমিকম্পের ভয়াবহতা নিয়ে যা বলা হয়েছে


ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম

 

ইশরাকের নামাজ অন্য অন্য নফল নামাজের মত দুই রাকাত দুই রাকাত করে পড়তে হয়। ইশরাকের নামাজের জন্য আলাদা কোনও নিয়ম পদ্ধতি নাই। ইশরাকের নামাজের সুনির্দিষ্ট কোন রাকাতের সংখ্যা নাই, কিছু কিছু আলেমগণ বলেছেন ইশরাকের নামাজ দুই রাকাত দুই রাকাত করে মোট ১২ রাকাত পর্যন্ত পড়া যায়। তবে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই রাকাত দুই রাকাত করে মোট চার রাকাত ইশরাকের নামাজ পড়তেন। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন