ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, মূল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান-- এই তিনটি কেন্দ্রই ইরানের পরমাণু কর্মসূচির প্রাণভোমরা। ট্রাম্পের দাবি, এই আঘাতে ইরান অন্তত কয়েক বছর পিছিয়ে পড়েছে এবং তাদের পারমাণবিক হুমকি এখন আর অবশিষ্ট নেই।
ফোর্দোতে নিক্ষেপ করা হয় ১৪টি ‘বাংকার-বাস্টার’ বোমা, যেগুলো ভূগর্ভে ২০০ ফুট নিচে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। নাতাঞ্জে আঘাত হানে স্টিলথ বোমার বহর, আর ইসফাহানে ছোড়া হয় টমাহক ক্রুজ মিসাইল।
আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা জানায়, ইসফাহানের ছয়টি ভবন ধ্বংস হয়েছে, যার মধ্যে ছিল একটি কেমিক্যাল ল্যাব ও দূষিত উপকরণ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র। তবে ফোর্দো বা নাতাঞ্জে কেন্দ্রীয় ইউরেনিয়াম সঞ্চয়াগারের অবস্থা এখনও নিশ্চিত নয়। কোনো স্বাধীন মূল্যায়ন এখনো প্রকাশ পায়নি বলে জানায় গণমাধ্যম।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো ধরনের সমঝোতা হয়নি: ইরান
ইরান বলছে, হামলার আগেই মূল উপকরণ সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে এক উপদেষ্টা দাবি করেন, স্থাপনাগুলো খালি ছিল, তাই বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি।
আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা ও গালফ রাষ্ট্রগুলো জানায়, কোনো তেজষ্ক্রিয় পদার্থ লিক হয়নি, যা ইঙ্গিত করে, মূল সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম এখনও হয়ত অক্ষত আছে।
বিশ্লেষকদের দাবি, হামলার আগে থেকেই ইরান প্রস্তুতি নিচ্ছিল। যদিও মজুদ কোথায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।
এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, এই হামলায় ইরান কতটা পিছিয়ে গেল? বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের সবচেয়ে বড় সম্পদ তাদের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ। যতক্ষণ না তা ধ্বংস হয়, তাদের কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস হবে না।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির দাবির মধ্যে ইসরাইলে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান
তাদের মতে, কেন্দ্র ও অবকাঠামো ভাঙলেও জ্ঞান, প্রযুক্তি ও কাঁচামাল থাকলে তারা আবার ফিরে আসতে পারে। একই আশঙ্কা পশ্চিমা গোয়েন্দাদের মধ্যেও।
তারা বলছেন, এই হামলা হয়ত সাময়িক ধাক্কা, স্থায়ী সমাধান নয়।
]]>