গত শনিবার (৫ এপ্রিল) আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম লা নাসিয়নকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আইএইএ প্রধান জানান, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ইরান সফরে যাবেন তিনি। বলেন, তার এই সফর লক্ষ্য হবে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে ‘সংঘাতের ঝুঁকি কমানো’।
ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা সম্পর্কে গ্রোসি বলেন, তাদের কাছে অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় পদার্থ আছে। কিন্তু কোনো অস্ত্র নেই।
ইরানের পরমাণু ইস্যুতে দেশটির সঙ্গে কয়েক দশক ধরে উত্তেজনা চলছে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর। অভিযোগ, পরমাণু কর্মসূচির আড়ালে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। ইরান বরাবরই এই অভিযোগ নাকচ করে আসছে।
আরও পড়ুন: সম্ভাব্য মার্কিন হামলা নিয়ে আরব দেশগুলোকে ইরানের হুঁশিয়ারি
ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে না পারে সেই লক্ষ্যে ব্যাপক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও অনেক আলাপ-আলোচনার পর ২০১৫ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়।
কিন্তু ২০১৮ সালে ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদকালে ঐতিহাসিক ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। এতে ওয়াশিংটন-তেহরান সম্পর্কে জটিলতা তৈরি হয়। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর নতুন চুক্তির জন্য প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন ট্রাম্প।
গত মার্চে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে ইরানের কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় তেহরান।
এরপর ট্রাম্প হুমকি দেন, নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি না হলে ইরানে বোমা হামলা চালাবেন তিনি। শুধু হুমকিই নয়, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে ভারত মহাসাগরে দিয়েগো গার্সিয়া সামরিক ঘাঁটিতে বোমারু বিমানও মোতায়েন করেছে।
আরও পড়ুন: ইয়েমেনে বিমান হামলার ভিডিও এক্স-এ পোস্ট করলেন ট্রাম্প
তবে ট্রাম্পের এ হুমকি খুব একটা পাত্তা দেয়নি ইরান। বরং পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, মার্কিন হুমকির কাছে ইরান মাথা নত করবে না। ইরানে হামলা হলে তার কঠিন জবাব দেয়া হবে।
পাশাপাশি তেহরান জানায়, সরাসরি আলোচনা নয়, পরোক্ষভাবে কূটনৈতিক বার্তা বিনিময়ে আগ্রহী তারা। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের প্রতি অন্য পক্ষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত তেহরান ওয়াশিংটনের সাথে সরাসরি আলোচনায় অংশ নেবে না।
গাজা, লেবানন ও সিরিয়ায় ইসরাইলের অব্যাহত হামলা ও ইয়েমেনে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনীর অভিযানের মধ্যে ট্রাম্পের ইরানে বোমা হামলার হুমকিতে পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতের উদ্বেগ উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোকে অস্থির করে তুলেছে।