নিচের আয়াতে আল্লাহ তাআলা জানাচ্ছেন, কীভাবে তিনি ইউসুফ (আ.)-কে মনোনীত করে নবুওয়াত, জ্ঞান, স্বপ্নের ব্যাখ্যার মত মহৎ গুণে ভূষিত করবেন, এবং পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষ ইবরাহীম ও ইসহাক (আ.)-এর মতই অনুগ্রহের পূর্ণতা দান করবেন।
আল্লাহ বলেন, وَکَذٰلِکَ یَجۡتَبِیۡکَ رَبُّکَ وَیُعَلِّمُکَ مِنۡ تَاۡوِیۡلِ الۡاَحَادِیۡثِ وَیُتِمُّ نِعۡمَتَہٗ عَلَیۡکَ وَعَلٰۤی اٰلِ یَعۡقُوۡبَ کَمَاۤ اَتَمَّہَا عَلٰۤی اَبَوَیۡکَ مِنۡ قَبۡلُ اِبۡرٰہِیۡمَ وَاِسۡحٰقَ ؕ اِنَّ رَبَّکَ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ
অর্থ: আর এভাবেই তোমার প্রতিপালক তোমাকে (নবুওয়াতের জন্য) মনোনীত করবেন, তোমাকে সকল কথার সঠিক মর্মোদ্ধার শিক্ষা দেবেন (স্বপ্নের তাবীর জানাও তার অন্তর্ভুক্ত) এবং তোমার প্রতি ও ইয়াকুবের সন্তানদের প্রতি নিজ অনুগ্রহ পূর্ণ করবেন, যেভাবে ইতঃপূর্বে তিনি পূর্ণ করেছিলেন তোমার পিতৃদ্বয়- ইবরাহীম ও ইসহাকের প্রতি। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। ( সুরা ইউসুফ: ৬)
অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলা যেমন এ স্বপ্নের মাধ্যমে তোমাকে সুসংবাদ দিয়েছেন যে, সকলে তোমার অনুগত হয়ে যাবে, তেমনি তিনি নবুওয়াত দানের মাধ্যমে তোমাকে আরও বহু নি‘আমতে পরিপ্লুত করে তুলবেন।
আরও পড়ুন: মোহরের সর্বনিম্ন পরিমাণ কত টাকা?
এই আয়াত আমাদের শেখায়—আল্লাহ যাকে মনোনীত করেন, তাকেই তিনি জ্ঞান ও নেয়ামতের মাধ্যমে পরিপূর্ণ করেন। আর সেই মনোনয়ন শুধু বংশের কারণে নয়, বরং সেই বান্দার অন্তরের খালিছ নিয়্যাত, ধৈর্য, তাকওয়া ও আল্লাহর প্রতি নির্ভরতার ফল।
রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
যে ব্যক্তি জ্ঞান অর্জনের পথে অগ্রসর হয়, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেন। (সহিহ মুসলিম: ২৬৯৯)
আরও এসেছে, তোমরা হিকমত (জ্ঞানের গভীরতা) শিক্ষাও করো, কেননা যে ব্যক্তিকে হিকমত দান করা হয়, সে অবশ্যই বিরাট কল্যাণ লাভ করে। (সুরা বাকারা: ২৬৯)
এই হাদিস ও আয়াত ইউসুফ (আ.)-এর জীবনেও প্রতিফলিত হয়। তিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতেন, মানুষের বোঝার অতীত জটিল বিষয়কে সহজে বিশ্লেষণ করতেন—যা আল্লাহর এক বিশেষ অনুগ্রহ।
হজরত ইউসুফ (আ.)-এর জীবনের এই অধ্যায় আমাদেরকে শেখায়, আল্লাহ যাকে চান, তাকেই মনোনীত করেন এবং নিজ নেক বান্দাদের প্রতি অনুগ্রহের ধারা কখনো থেমে থাকে না। আমাদের দায়িত্ব হলো আল্লাহর পথে ধৈর্য ও ন্যায়ের সাথে অটল থাকা। জ্ঞান, তাকওয়া ও আল্লাহর উপর নির্ভরতা আমাদের জন্যও সেই নেয়ামতের দরজা খুলে দিতে পারে।
]]>