পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন,
হে নবীপত্নীগণ, তোমরা সাধারণ কোনো নারীর মতো নও। যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, তবে পরপুরুষের সঙ্গে কোমলভাবে কথা বলো না। অন্যথায়, যার অন্তরে ব্যাধি আছে, সে লালসায় পড়বে আর তোমরা সংগত কথা বলো। এবং তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করো এবং পূর্বেকার জাহেলিয়াতের যুগের মতো নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে বেড়িয়ো না। আর নামাজ কায়েম করো, জাকাত প্রদান করো এবং আল্লাহ ও তার রসুল (সা.)-এর অনুগত থাকো। হে নবী পরিবারবর্গ, আল্লাহ চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদের সম্পূর্ণ পবিত্র করে দিতে। (সুরা আহজাব, আয়াত: ৩২-৩৩)
আরও পড়ুন: ইসলামে পা ছুঁয়ে সালাম করা কি জায়েজ?
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এমনই মত পোষণ করেছেন। তবে আয়াতটিতে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের কথা বলা হলেও বিশুদ্ধ অভিমত হলো, অধিকাংশ আলেমের মতে, স্ত্রীরা ছাড়াও নবী-পরিবারের অন্তর্ভুক্ত আরও অনেকেই আছেন; যা বহু হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। (মিন-মায়ীনিশ শামায়েল, ১ম অধ্যায়, ৭ম পরিচ্ছেদ)
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, এক সকালে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইরে বের হলেন। তার পরনে ছিল কালো নকশি করা পশমি কাপড়। সেখানে হাসান (রা.) এলেন এবং একটু পরে হুসাইন (রা.)-ও এলেন। তিনি একের পর এক উভয়কেই চাদরের ভেতরে নিয়ে নিলেন। এমনকি ফাতেমা (রা.) এবং সর্বশেষে আলী (রা.) এলে তাদের দু’জনকেও চাদরে জড়িয়ে নিলেন। তারপর এই আয়াতটি পাঠ করলেন, ‘হে নবী পরিবারবর্গ, আল্লাহ চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদের সম্পূর্ণ পবিত্র করে দিতে।’ (সুরা আহজাব, আয়াত: ৩৩)। (মুসলিম: ২৪২৪)
এ-ছাড়া সদকা সম্পর্কিত কয়েকটি হাদিসে রয়েছে, আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, নবীজি হাসান বা হুসাইনের মুখ থেকে সদকার খেজুর বের করে বলেছেন, তোমার কি জানা নেই যে, মুহাম্মদের পরিবারবর্গ সদকা খায় না? (বুখারি: ১৪৮৫)
আরও পড়ুন: ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ’ ফজিলত ও ব্যাখ্যা
এতে বোঝা যায়, নবীজির আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে যাদের সদকা খেতে নিষেধ করা হয়েছে, তারা সবাই পরিবারের অন্তর্ভুক্ত।
এক বর্ণনায় ‘আহলে বাইত’ বলতে তাদেরকে বুঝানো হয়েছে, যাদের উপর চিরদিন সদকা গ্রহণ করা নিষিদ্ধ। তারা হলেন, আলী, আকিল, জাফর ও আববাস (রা.)-এর বংশধরগণ। (মুসলিম: ২৪০৮)।
ইবনু কাসির (রহ.) বলেন, ‘আহলে বাইত’ বলতে কেবল নবীপত্নীগণ নন। বরং তার পরিবারগণও এর অন্তর্ভুক্ত। আর এটিই এ বিষয়ে বর্ণিত কোরআন ও হাদিসমূহকে শামিল করে। আহলে বায়েত থেকেই ইমাম মাহদি (আ.) আগমন করবেন। (ইবনু মাজাহ: ৪০৮৫-৮৬)