গত দুই সপ্তাহের পাল্টাপাল্টি হামলা আর আতঙ্কের পর স্বৈরাচার প্রেসিডেন্টের পতনে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন সিরিয়ার সাধারণ মানুষ। দু-তিন সপ্তাহ আগেও যেখানে বাশার আল-আসাদের আতঙ্ক বিরাজ করতো, সেখানে এখন দেখা মিলছে উল্লাসরত সিরীয়দের।
শত শত যানবাহনে সিরিয়ার সীমান্তে ভিড় জমাচ্ছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত সিরীয় উদ্বাস্তুরাও। ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধে প্রাণ বাঁচাতে লেবানন, তুরস্কের মতো বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেন তারা। স্বৈরাচারের পতনে নিরাপদে দেশে ফেরার তোড়জোড় করছেন তারা। বুধবার লেবানন ও সিরিয়ার মধ্যবর্তী মাসনা ক্রসিং পয়েন্টে দেশফেরত হাজারো মানুষের ভিড় দেখা যায়। একই দৃশ্য দেখা যায় তুরস্ক ও সিরিয়ার মধ্যবর্তী সীমান্তেও।
দেশের এই নবজন্মে আশাবাদী সিরিয়ায় বসবাসরত নাগরিকরাও। এতো বছরের নির্বিচার হত্যা ও অত্যাচারের পর স্বাধীনভাবে নিশ্বাস নিতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করছেন তারা। এছাড়া সরকার পতনের পর ব্যবসা বেড়েছে বলে জানান সিরিয়ার ব্যবসায়ীরা। বাজারগুলোতেও উল্লেখযোগ্য হারে ভিড় দেখা যাচ্ছে। সরকারের নানা বিধিনিষেধের জন্য এতোদিন স্বাধীনভাবে ব্যবসা করা সম্ভব ছিল না বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় দেশগুলোতে সিরীয়দের আশ্রয়লাভের আবেদন স্থগিত
সিরিয়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘ব্যক্তিগত মতাদর্শ এবং বিশ্বাসের জেরে এই দেশ অনেক রক্তপাত দেখেছে। আমরা এখন শান্তি চাই। আশা করছি নতুন প্রশাসন ধর্মের সঙ্গে দেশ ও রাজনীতিকে জড়িয়ে ফেলবে না। ধর্মের নামে কাউকে কোণঠাসা করা হবে না।’
আরেক সিরীয় ব্যবসায়ী বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আশা করি সামনে আরও উন্নতি দেখা যাবে। আগে সরকার আমাদের কাজ করতে দিতো না। সারাদিন টহলদার পুলিশের পাহারা চলতো। কিন্তু এখন ব্যবসা উন্নতির মুখ দেখছে।’
আরও পড়ুন: ১ কোটি ৬০ লাখ সিরীয়র মানবিক সহায়তা প্রয়োজন: জাতিসংঘ
এদিকে, আসাদ সরকারের পতনে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বলেন, বাশার আল-আসাদের পতনে মধ্যপ্রাচ্যে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। এমনকি, ক্ষমতা রদবদলের এই সময় যাতে সুন্দরভাবে কাটে এজন্য বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি। এ অবস্থায় জাতিসংঘ সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পাশে দাঁড়াবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
]]>