এঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা সারমিন। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) এ ঘটনা ঘটেছে।
আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও পূলিশ সূত্রে জানা যায়, আশুগঞ্জ বাজারে উপজেলা ভূমি কার্যালয় অবস্থিত। ভূমি কার্যালয়ের পেছনে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল ছিল। সেটি টিনের বেড়া দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। সেখানে জুলাই আগস্টের অনুষ্ঠান করতে মঙ্গলবার এনসিপির নেতাকর্মীরা যান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এসিল্যান্ডের অনুমতি না নিয়ে ভূমি কার্যালয় চত্বরে ঢোকেন এনসিপির নেতারা। তারা এক পর্যায়ে ঢেকে রাখা ম্যুরালের চারপাশ থেকে টিনের বেড়া সরিয়ে নেন।
খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা সারমিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাধা দেন। এনিয়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের কথা কাটাকাটি হয়। আশুগঞ্জ উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম এক পর্যায়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং হুমকি দেন। এঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন এসিল্যান্ড।
আরও পড়ুন: এনসিপির শীর্ষ ৬ নেতা হঠাৎ কক্সবাজারে
আশুগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা সারমিন বলেন, ‘অনুষ্ঠান করতে সকালে ভূমি অফিসের সীমানা দেয়া জায়গা ভেঙে দিয়েছে এনিসিপির নেতারা। সরকারি জায়গায় অনুমতি ছাড়া অনুষ্ঠানে বাধা দিলে এনসিপির নেতা আমিনুল ইসলাম ডালিম উল্টো আমাকে হুমকি দিয়েছেন। আমার সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। অনুষ্ঠানের বিষয়ে তারা কাউকে অবগত করেনি। ইউএনও স্যারও তাদের অনুষ্ঠানের বিষয়ে অবগত নয়। তারা অনুষ্ঠান করবেই বলে জানিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছিল। হুমকি দেয়ায় এবং বাধা না মানায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।’
এনসিপির আশুগঞ্জ উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিকেল পাঁচটায় আশুগঞ্জের কাচারি পুকুর পাড়ে জুলাই আগস্টের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল করব। উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের পেছনে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল ছিল। ম্যুরালটি টিনের বেড়া দিয়ে তারা ঢেকে রেখেছিল। মিলাদ মাহফিলের জন্য মঙ্গলবার সকালে এনসিপির সদস্যরা সেখানে পরিষ্কার করতে যান। পরিষ্কার করতে গিয়ে টিনের একটি বেড়া খুলে ছিল। এজন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফোন করে আমাদের পুলিশ দিয়ে গ্রেফতারের হুমকি দেন। আমি বলেছিলাম আমাদের বাধা দিয়েন না। আমরা অনুষ্ঠানটি করে ফেলি। কিন্তু সেখানে অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে জানান তিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘হুমকির বিষয়টি বানোয়াট। বিকেলে আছরের নামাজের পর জুলাই স্মৃতিচারণ এবং শহীদদের স্মরণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন শেষ হয়।’
আরও পড়ুন: জুলাই অভ্যুত্থান দিবসে কক্সবাজারে এনসিপি নেতারা, ‘ব্যক্তিগত সফর’ বলছেন পাটওয়ারী
এব্যাপারে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাফে মোহাম্মদ ছড়া বলেন, ‘সরকারি অফিসের টিনের বেড়া সরিয়ে এনসিপির ব্যানারে জুলাই মঞ্চের নামে সমাবেশ করেছে। কিন্তু সরকারি অফিস, অফিসের নিরাপত্তা ও গোপনীয় নথি আছে এবং এখানে অনুষ্ঠান করতে দিতে পারি না। তারা কোথাও থেকে কােনো অনুমতি নেয়নি। বাধা দেয়ায় এসিল্যান্ডের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে তারা। এনসিপির জেলার যুগ্ম সমন্বয়ক আকিব জাবেদ উল্টো অনুষ্ঠানের অনুমতি দিতে বলেছেন। অনুমতি না দিলে আমরা নিজেরাই করে ফেলবে বলে জানিয়েছে।’