দুই বিঘা জমিতে ১৭০ মণ আলু উৎপাদন করেন মুন্সিগঞ্জ সদরের কৃষক শাহ আলম। একদিকে আলুর দরপতন, অন্যদিকে হিমাগারে জায়গা না পেয়ে সংরক্ষণ করছেন নিজ বাড়ির আঙ্গিনায়। এতে ফসল নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, মুন্সিগঞ্জের হিমাগারগুলো ইতোমধ্যে পূর্ণ হয়ে গেছে। আলু রাখার জায়গা মিলছে না।
অন্যান্য জেলার তুলনায় মুন্সিগঞ্জে দেরিতে হয় আলুর ফলন। এই সুযোগে স্থানীয় ফরিয়া ও ব্যবসায়ীরা কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে আগাম বুকিং দিয়ে উত্তরবঙ্গের আলু এনে সংরক্ষণ করেন। ফলে বিপাকে জেলার আলু চাষিরা।
হিমাগার খালি পড়ে থাকে এমন দাবি করে বাধ্য হয়েই অন্য জেলার আলু সংরক্ষণ করা হয় বলে দাবি ফড়িয়াদের। তারা বলেন, রংপুর, দিনাজপুরের আলু আগে ক্ষেত থেকে ওঠানো হয়। সেসব আলু এনে হিমাগারে রাখায় এখন মুন্সিগঞ্জের আলু রাখার জায়গা দেয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: হিমাগারে আলু সংরক্ষণে বাড়তি খরচের চাপে কৃষক
হিমাগার মালিকদের দাবি সংরক্ষণ সক্ষমতার চেয়ে মুন্সিগঞ্জে কম আলু উৎপাদিত হয়। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, জেলার ৫৮টি হিমাগারে সংরক্ষণ সক্ষমতা ৫ লাখ টনের বেশি। তবে আলু উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১১ লাখ টন।
বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মো. গোলাম সরওয়ার বলেন, কৃষি কমে আসলেও হিমাগারের জায়গা একই রয়ে গেছে। তাই হিমাগার ভর্তি করার জন্য মালিকরা জেলার বাইরে থেকে আলু এনে মজুত করছেন।
স্থানীয় কৃষকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আলুর সংরক্ষণের সুযোগ রাখার আহ্বান কৃষি অর্থনীতিবিদদের। কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম, যেখানে হিমাগার আছে, সেখানে স্থানীয়ভাবে যেসব কৃষকরা আলু সংরক্ষণ করতে চায়, তাদেরকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাদের চাহিদা মিটিয়ে অন্যকে দেয়ার সুযোগ থাকলে, তখন দেয়া যেতে পারে।
উল্লেখ্য, হিমাগারে জায়গা না পেয়ে অনেক কৃষক মডেল ঘরেও আলু সংরক্ষণ করছেন।
]]>