আর্মেনিয়ার জালে ৯ গোল, বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে পর্তুগাল

১০ ঘন্টা আগে
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে টানা দুই ম্যাচে হোঁচট, আগের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের কাছে ২-০ গোলের হার ও তার আগের ম্যাচে হাঙ্গেরির সঙ্গে ড্র করায় কিছুটা অনিশ্চয়তা জেগেছিল বটে। তার মধ্যে আবার গত ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় আজকের ম্যাচে খেলতে পারেননি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। কিন্তু তাতে কি, আর্মেনিয়ার জালে একে একে ৯টি গোল করলো পর্তুগাল। আর তাতেই বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে জায়গা করে নিলো সেলেকাওরা।

আগের ম্যাচে লাল কার্ড পাওয়ায় আজ আর্মেনিয়ার বিপক্ষে খেলতে পারেননি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তবে তার অনুপস্থিতি এতটুকুও বুঝতে দেননি সতীর্থরা। ৯-১ গোলের বিশাল জয়ে বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করলো পর্তুগাল। বড় জয়ের পথে হ্যাটট্রিক করেছেন ব্রুনো ফার্নান্দেস ও জোয়াও নেভেস। 

 

রোববার (১৬ নভেম্বর) পোর্তোর স্তাদিও দো দ্রাগাওতে ম্যাচের শুরু থেকেই দাপুটে ফুটবল খেলতে থাকে পর্তুগাল। দলের নিয়মিত অধিনায়ক রোনালদোকে ছাড়া খেলতে নেমে ম্যাচের ৭ মিনিটেই এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। রেনাতো ভেইগার গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন গনসালো রাসোস। এরপর শুরু হয় পর্তুগিজদের গোল উৎসব। 

 

পুরো ম্যাচে ৭৫ শতাংশ সময় বল নিজেদের দখলে রেখেছে পর্তুগাল। গোলের জন্য ৩৪টি শট নিয়েছে তারা, লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে ১৫টি। অন্যদিকে আর্মেনিয়া গোলের জন্য শট নিতে পারে মাত্র ৪টি, তার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল মাত্র দুটি। ৬ ম্যাচে ৪ জয় ও ১ ড্রয়ে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘এফ’ গ্রুপের সেরা হয়ে বিশ্বকাপে উঠলো পর্তুগাল।

 

আরও পড়ুন: সেনেগালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে চোট পেয়েছেন গ্যাব্রিয়েল  

 

আর্মেনিয়ার মাঠে ৫-০ গোলে জিতে বাছাইপর্ব শুরু করেছিল পর্তুগাল। সেই দলকেই উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিল পর্তুগিজরা। 

 

ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণ শুরু করে পর্তুগাল, চেপে ধরে প্রতিপক্ষকে। সাফল্যও পেয়ে যায় দ্রুত। সপ্তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে ব্রুনো ফার্নান্দেসের ফ্রি কিক গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ফেরালেও দলকে বিপদমুক্ত করতে পারেননি, ফিরতি বল পেয়ে হেডে জাল খুঁজে নেন ভেইগা। 

 

১১ মিনিট পর সমতায় ফেরে আর্মেনিয়া। আক্রমণে উঠে ডান দিক থেকে গোলমুখে ক্রস বাড়ান রানোস, তবে শট নিতে পারেননি এদুয়ার্দ। কিন্তু তিনি পড়ে যাওয়ার আগমুহূর্তে তার পায়ে লেগে বল চলে যায় জালে। 

 

এরপর যা হলো, তা অবশ্য মনে রাখতে চাইবে না আর্মেনিয়া। দুই মিনিটের ব্যবধানে আরও দুবার জালে বল পাঠিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় পর্তুগাল। 

 

২৮তম মিনিটে নিজেদের ভুলে আরও পিছিয়ে পড়ে আর্মেনিয়া। একজনের ব্যাকপাস গোলরক্ষকের কাছে পৌঁছানোর আগে মাঝপথে বল ধরে ফাঁকা জালে পাঠান ফরোয়ার্ড রামোস। ওই গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে ব্যবধান আরও বাড়ান নেভেস। 

 

আরও পড়ুন: কেইনের মতে, ব্যালন ডি’অর জয়ের স্বপ্ন পূরণে গোলের পাশাপাশি দলীয় ট্রফিও প্রয়োজন

 

৪১তম মিনিটে ডি-বক্সের বেশ বাইরে থেকে দারুণ এক ফ্রি কিকে দলের চতুর্থ গোলটি করেন নেভেস। তার বাঁকানো ফ্রি কিকে বল রক্ষণ প্রাচীরকে ফাঁকি দিয়ে ক্রসবারের লেগে জালে জড়ায়। কিছুক্ষণ পর ফার্নান্দেসের সফল স্পট কিকে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ে আর্মেনিয়া। 

 

দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে রামোসকে বল বাড়িয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন ফার্নান্দেস, এরপর সতীর্থের ফিরতি পাস পেয়ে কোনাকুনি শটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন তিনি। 

 

বের্নার্দো সিলভার বদলি নামা ফরোয়ার্ড কার্লোস ফোর্বস ৭০তম মিনিটে ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হলে ফের পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। এবং আরেকটি সফল স্পট কিকে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ফার্নান্দেস। 

 

৮১তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন নেভেসও। সতীর্থের হেডে বক্সের বাইরে বল পেয়ে ডান পায়ের শটে নিজের তৃতীয় গোলটি করেন এই মিডফিল্ডার। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে গোল উৎসবে যোগ দেন ফনসেইকাও। ডি-বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শটে গোলটি করেন লেয়াওয়ের বদলি নামা এই ফরোয়ার্ড। 

 

একই সময়ে শুরু হওয়া আরেক ম্যাচে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় তুলে নিয়েছে রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড। আগের ম্যাচে পর্তুগালকে হারিয়ে দেওয়া দলটি হাঙ্গেরির মাঠে অনেকটা সময় পিছিয়ে ছিল। তবে শেষ দিকের দুই গোলে ৩-২ ব্যবধানে জিতে গ্রুপ রানার্সআপ হয়েছে আইরিশরা। ১০ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্স আপ হওয়ায় প্লে-অফ খেলবে তারা। ৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় হওয়া হাঙ্গেরির সব আশা শেষ। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন