আরামকোসহ বাংলাদেশে এলএনজির ২২ নতুন সরবরাহকারী

৩ সপ্তাহ আগে
বাংলাদেশে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহকারী হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের তালিকাভুক্ত হয়েছে প্রায় দুই ডজন জ্বালানি প্রতিষ্ঠান, যাদের মধ্যে রয়েছে আরামকো ও গ্লেনকোরের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জ্বালানি কোম্পানি।

এর মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ স্পট মার্কেট বা খোলাবাজার থেকে আগের তুলনায় অপেক্ষাকৃত প্রতিযোগিতামূলক দরে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি কিনতে সক্ষম হবে বলে সরকারের জ্বালানি সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

 

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে রয়টার্স জ্বালানি উপদেষ্টা ফওজুল কবির খানের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, আগে খোলাবাজার থেকে বাংলাদেশের এলএনজি ক্রয়ে মূলত কর্তৃত্ব করতো ভিটোল, গানভর এবং এক্সিলারেট এনার্জির মতো কোম্পানিগুলো। তবে আগস্টের অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দায়িত্ব গ্রহণকারী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গোপন দরপত্রের বদলে খোলা দরপত্র আহ্বানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

 

আরও পড়ুন: ব্রুনাই থেকে আসবে এলএনজি, নীতিগত অনুমোদন

 

রয়টার্সের এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো এলএনজি আমদানি শুরু করে। ২০২৩ সালে এলএনজি আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৫২ লাখ মেট্রিক টনে, যা তার আগের বছরের চেয়ে ১৯ শতাংশ বেশি। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, অভ্যন্তরীণ প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার বিপরীতে দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এলএনজির চাহিদা।

 

বর্তমানে বাংলাদেশ বছরের ৫০৪ মিলিয়ন ডলারের এলএনজি আমদানি করে যার অধিকাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে ব্যবহৃত হয়। আমদানি করা এই এলএনজির অর্ধেকই আসে কাতার ও ওমান সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সরকারি চুক্তির আওতায়, আর বাকি অর্ধেক ক্রয় করা হয় স্পট মার্কেট থেকে।

 

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার অর্ধেকেরও বেশি গ্যাস-নির্ভর, তবে বর্তমানে অনেক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রই সরবরাহ সংকটে ভুগছে।

 

উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বলেছিলেন, ‘ আরামকো, শেল ও বিপির মতো প্রায় সব বড় বড় জ্বালানি কোম্পানিই এলএনজি সরবরাহের জন্য আবেদন করেছে। খাতটি উন্মুক্ত করে দেয়ার কারণেই এই সুবিধা।  আরও বেশি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে খরচ কমিয়ে আনতে আমরা খাতটি খুলে দেয়ার চেষ্টা করছি।’

 

তবে সম্ভাব্য আর্থিক সাশ্রয়ের বিষয়টি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল) এর নতুন অর্ডারের ওপর নির্ভর করবে বলে উল্লেখ করেন জ্বালানি উপদেষ্টা। পাশাপাশি কবে নতুন অর্ডার দেয়া হবে তিনি তা নিশ্চিত করেননি বলে জানায় রয়টার্স।

 

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নতুন গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে শেভরন 

 

সৌদি আরামকোর নতুন বাণিজ্যিক শাখা আরামকো ট্রেডিং কোম্পানি, বিপি সিঙ্গাপুর, শেল ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং মিডল ইস্ট এবং গ্লেনকোর সিঙ্গাপুরসহ ২২টি নতুন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে এলএনজির সম্ভাব্য সরবরাহকারী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এই কোম্পানিগুলোসহ সব মিলিয়ে ৩৩টি কোম্পানি বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহের ব্যাপারে তালিকাভুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

 

অনুমোদিত তালিকায় ভিটল এশিয়া, গানভর সিঙ্গাপুর ও এক্সিলারেট এনার্জির নাম রয়েছে। এসব কোম্পানি আগে থেকেই বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহ করে। এর আগে নভেম্বরে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি সরবরাহের জন্য আগ্রহী জ্বালানি কোম্পানিগুলোকে দরপত্র দেয়ার আহ্বান জানায় আরপিজিসিএল। নতুন যে তালিকা করা হয়েছে তা দিয়ে আগের তালিকাটি পুনঃস্থাপিত হবে। 

 

বাংলাদেশ বছরে প্রায় ১শ কার্গো এলএনজি আমদানি করে, এরমধ্যে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির ভিত্তিতে কাতার ও ওমান থেকে ৫০টির বেশি কার্গো আনা হয়, বাকি চালানগুলো স্পট মার্কেটের বেসরকারি কোম্পানিগুলো সরবরাহ করে বলে জানান ফাওজুল কবির খান।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন