সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় নাফ নদীর মোহনায় শাহপরীর দ্বীপের বদরমোকামের ‘গরা’ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
উদ্ধার জেলেরা হলেন: সুলতান আহমদ, নুর কবির, কবির আহমদ, আলী হোসেন, সোনা মিয়া গফুর আলম ও আব্দুল আমিন মাঝি।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাটে ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম।
তিনি বলেন, ‘টেকনাফ সদরের নতুন পল্লানপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ হাশেমের মালিকাধীন ট্রলার এটি। বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার শেষে টেকনাফে ফেরার সময় মিয়ানমারের আরাকান আর্মির ধাওয়ায় ট্রলারটি গরায় ঢেউয়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। এতে সাত জেলে ছিলেন। তারা জীবিত অবস্থায় কুলে ফিরে আসেন। তবে ট্রলারে থাকা কয়েক লাখ টাকার মাছ ও জালসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ভেসে গেছে।’
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ১৫ জেলেসহ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ৬
ট্রলার মালিকের বরাত দিয়ে আবুল কালাম আরও বলেন, গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়াপাড়া ঘাট থেকে সাতজন মাঝিমাল্লাসহ ট্রলারটি সেন্টমাটিন দ্বীপে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মাছ ধরতে যায়। বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক লাখ টাকার মাছ জালে ধরা পড়ে।
সেগুলো নিয়ে টেকনাফে আসার পথে সোমবার দুপুরের দিকে টেকনাফ-সেন্টমাটিন নৌপথের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় পৌঁছালে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা স্পিডবোটে এসে তার ট্রলারটিকে ধাওয়া করেন। এ সময় ট্রলারের মাঝি ট্রলারটি দ্রুতগতিতে চালিয়ে নাফ নদীর মোহনা শাহপরীর দ্বীপ বদরমোকামের ‘গরায়’ উঠিয়ে দেন। ট্রলারটি ঢেউয়ের কবলে পড়ে ডুবে গেছে। তবে জেলেরা সাঁতরে কূলে ফিরে আসেন বলে জানান তিনি।
ট্রলার মালিক মোহাম্মদ হাশেম বলেন, ‘ট্রলারটি ডুবে রয়েছে। তবে ট্রলারটি বালুতে ঢুকার পাশাপাশি ঢেউয়ে কবলে পড়ে ভেঙে যেতে পারে।’
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি, ১১ ঘণ্টা ভেসে থাকা ১০ জেলেকে জীবিত উদ্ধার
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘আরাকান আর্মির ধাওয়ায় এবার মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।’
এর আগে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি মাছ ধরার ট্রলারসহ সাত জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ শিকার শেষে টেকনাফে ফেরার পথে শাহপরীর দ্বীপের নাইক্ষ্যংদিয়ার নাফ নদীর মোহনা থেকে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাটে ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম।
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রালারডুবি, মাঝি নিখোঁজ
তিনি বলেন, ট্রলারটির মালিক টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল মোনাফের ছেলে উমর ছিদ্দিকের মালিকাধীন। মাছ ধরার ট্রলারটিতে সাতজন মাঝিমাল্লা ছিলেন।
এ নিয়ে গত ২০ দিনে ৪০ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগে রোববার (২৪ আগস্ট) দুটি ট্রলারসহ আরও ১৪ জেলে, শনিবার (২৩ আগস্ট) একটি ট্রলারসহ ১২ জেলে, ১২ আগস্ট ট্রলারসহ ৫ জেলে এবং ৫ আগস্ট বিভিন্ন জাল ও নৌকাসহ দুই জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে আরাকান আর্মি ২৪৪ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে যায়।