মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমচাষী, ব্যবসায়ী ও রফতানিকারকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে সংগঠনটির সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে যেসমস্ত সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাদের নিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। এ নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কেও অবহিত করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বড় পরিসরে এ নিয়ে আলোচনাও করবে।’
মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা সরকারকে অনুরোধ করেছি, যাতে দুই দেশের সরকার পর্যায়ে আলোচনার পথ তৈরি করে কুটনৈতিকভাবে বা বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের আলোচনা করতে।’
আরও পড়ুন: ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পোশাক রফতানিকারকরা
এ সময় অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ও সুনিবিড়৷ আমাদের মধ্যে পারস্পারিক নির্ভরতা রয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করছে। ব্যবসা এমন একটা জিনিস, যেখানে উভয় পক্ষই লাভবান হয়। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় দেশের জনগণই সুবিধার অংশীদার।’
দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। আশা করি, দুই দেশের ব্যবসায়ী ও সরকার আলোচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে এর সমাধান করবে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আজ সকালে দুটি আমবাগান পরিদর্শন করেছি। সেখানে দেখেছি, বিদেশে আম রফতানির জন্য চাষিদের ভালো প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা এ বছর থেকে চীনে আম রফতানি করব। তারা চলতি মৌসুমে এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আম নিতে চায়৷ তবে রফতানিতে গিয়েও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এতে যেসব সমস্যা রয়েছে, তা সমাধানে কাজ করা হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে অন্তত ১০টি হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণ জানাল জিটিআরআই
আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আম রফতানির জন্য কয়োরেন্টাইন সুবিধার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে রাজশাহী অথবা চাঁপাইনবাবগঞ্জে তা স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি আমরা চিন্তা করছি, রফতানি সহজ করতে রাজশাহী এয়ারপোর্ট থেকে কার্গো বিমানের মাধ্যমে বিদেশে আম পাঠানো যায় কি না। সেটি সম্ভব হলে এখানেই প্যাকেজিংসহ অন্যান্য সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে।’
বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘প্রক্রিয়াজাত পণ্য রফতানির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এ দিকে উদ্যোক্তাদের নজর দিতে হবে। উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে তাদের নতুন নতুন পণ্য উৎপাদনের দিকে নজির দিতে হবে। এতে উদ্যোক্তাদের যে সব সহযোগিতা প্রয়োজন, তা সরকারের পক্ষ থেকে করা হবে। সহজ শর্তে আমচাষিদের অর্থায়নের ব্যাপারেও নীতিনির্ধারণী মহলে আলোচনা করা হবে৷
আরও পড়ুন: প্রথম দিনেই বেনাপোল দিয়ে রফতানি কমেছে ৫০ শতাংশ
আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৩-৫ লাখ মেট্রিক টন আম রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের জন্য আমচাষিদের প্রতি আহ্বান জানান মো. আনোয়ার।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন: চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন: রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিচালক মো. শাহজালাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইকতেখারুল ইসলামসহ আমচাষী, ব্যবসায়ী, রফতানিকারকরা।