আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য জব্দের জেরে হামলা, নিরাপত্তা ঝুঁকিতে কাস্টমস কর্মকর্তারা

৬ দিন আগে
একের পর এক পপি সিড-কসমেটিক্স-সিগারেট এবং ঘন চিনির মতো আমদানি নিষিদ্ধ পণ্যের চালান জব্দ করে নিরাপত্তা শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। এর মাঝে পপি সিড জব্দকারী কাস্টমস কর্মকর্তা দুর্বৃত্তদের হামলারও শিকার হয়েছেন। পুলিশ প্রশাসন বলছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পাশাপাশি কাস্টমস হাউজের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

গত কয়েক মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি নিষিদ্ধ পপি সিড-কসমেটিক্স এবং ঘন চিনির অন্তত ৫টি চালান জব্দ করেছে কাস্টমস হাউজ। আইনি জটিলতা থাকায় একটি চক্র মিথ্যা ঘোষণায় এসব পণ্য আমদানি এবং ছাড় করার চেষ্টা করলেও কাস্টমস হাউজের গোয়েন্দা তথ্য সেই তৎপরতা ব্যর্থ করে দেয়।

 

আর তাতেই নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছেন অভিযানে অংশ নেয়া শুল্ক কর্মকর্তারা। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে পপি সিড জব্দের ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী উপ-কমিশনার আসাদুজ্জামান খানের উপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।

 

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ-কমিশনার মো. তারেক মাহমুদ বলেন, ‘যে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে কাস্টমস কর্মকর্তারা প্রত্যাশা করেন সরকার তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী, কারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি নিয়ে তৎপর রয়েছে।’

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, মাত্র কয়েক বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত দেশের অর্থনীতির প্রাণপ্রবাহ চট্টগ্রাম বন্দর এবং জাতীয় রাজস্ব আয়ে বছরে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকার জোগান দেয়া চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও জরুরি।

 

আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দর: জাহাজ জট কমায় লাখ লাখ ডলার সাশ্রয় ব্যবসায়ীদের

 

এদিকে, অভিযানে অংশ নেয়া কর্মকর্তাদের ওপর হামলা ও হুমকির ঘটনায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, প্রতিদিন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ থেকে গড়ে ৭ থেকে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়। এ ধরনের ঘটনায় কার্যক্রম ব্যাহত হলে তা সরাসরি রাজস্ব প্রবাহে প্রভাব ফেলবে।

 

চট্টগ্রাম কাস্টম এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম সাইফুল আলম বলেন, ‘একটি পূর্ণ তদন্ত বা অভিযানকে কেন্দ্র করে হামলা ও টার্গেট করা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে তৎপর রয়েছে এবং কাস্টম কর্তৃপক্ষ ও শুল্ক গোয়েন্দারা দায়িত্ব পালন করছেন, তাতে রাজস্ব আদায়ের যে দৃঢ়তা রয়েছে তা থেমে যাবে না।’

 

এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ ও বন্দর এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। একই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি।

 

সিএমপির উপ-কমিশনার মো. আমিরুল ইসলাম জানান, কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষকে ঘিরে বন্দর এলাকায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বন্দর ও কাস্টমস সংশ্লিষ্ট সব এলাকায় পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনায় সর্বদা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

 

কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে ১০ কোটি টাকা মূল্যের ২৫ মেট্রিক টন পপি সীড, ৩০ কোটি টাকা মূল্যের সিগারেট এবং কয়েক কোটি টাকা মূল্যের ১০৪ মেট্রিক টন ঘন চিনি ছাড়াও জব্দ হয়েছে বিপুল পরিমাণ আমদানি নিষিদ্ধ সিগারেট। আর এই আমদানির সঙ্গে শক্তিশালী একটি চক্র জড়িত।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন