সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবসরের ঘোষণা দিয়ে ওকস লেখেন, ‘সেই মুহূর্তটি এসে গেছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার এটাই সঠিক সময়।’
সবশেষ ভারতের বিপক্ষে ওভাল টেস্টে কাঁধে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ওকস। সে ম্যাচে স্লিংয়ে হাত ঝুলিয়ে ব্যাট করতে নামার সেই দৃশ্য ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে গেঁথে আছে। এই চোটের কারণেই মূলত তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি ঘটলো। ইংল্যান্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রব কী আগেই জানিয়েছিলেন যে, ওকস ‘আপাতত তাদের পরিকল্পনায় নেই’।
ওকস বলেন, ‘আমার বাবা-মা, আমার স্ত্রী অ্যামি এবং আমাদের দুই মেয়ে লাইলা ও এভি, বছরের পর বছর ধরে তোমাদের ভালোবাসা, সমর্থন এবং ত্যাগের জন্য ধন্যবাদ। তোমাদের ছাড়া এর কিছুই সম্ভব হতো না। ভক্তদের, বিশেষ করে বার্মি আর্মি, আপনাদের আবেগ, উল্লাস এবং বিশ্বাসের জন্য ধন্যবাদ।’
আরও পড়ুন: ভারতের সদস্যপদ ‘স্থগিত’ করার দাবি পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়কের
ওকস আরও বলেন, ‘ছোটবেলায় বাড়ির উঠোনে খেলার সময় থেকেই ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখতাম। আমি নিজেকে অবিশ্বাস্যরকম ভাগ্যবান মনে করি যে সেই স্বপ্নগুলো পূরণ করতে পেরেছি। গত ১৫ বছর ধরে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করা, থ্রি লায়ন্স প্রতীক পরা এবং সতীর্থদের সঙ্গে মাঠ ভাগাভাগি করা আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের। এই সতীর্থদের অনেকেই এখন আমার আজীবনের বন্ধু।’
স্মৃতিচারণ করে ওকস বলেন, ‘২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়ায় আমার ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল, মনে হয় যেন গতকালের ঘটনা। দুটি বিশ্বকাপ জয় এবং দুর্দান্ত কিছু অ্যাশেজ সিরিজের অংশ হতে পারবো, এটা কখনো ভাবিনি। সতীর্থদের সাথে সেই স্মৃতি এবং উদযাপনগুলো আমার সঙ্গে চিরকাল থাকবে। আমি পুরো সময়টা উপভোগ করেছি। কোনো আক্ষেপ নেই।’
ওকস জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও কাউন্টি ক্রিকেট চালিয়ে যাবেন তিনি। বর্তমানে ওয়ারউইকশায়ারের সঙ্গে নতুন চুক্তির আলোচনা করছেন। পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেও খেলতে চান তিনি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের প্রধান কোচকে পদত্যাগের আহ্বান সাবেক ক্রিকেটারের
৬২ টেস্ট খেলে ১৯২টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। এবং ১৫৫টি সীমিত ওভারের ম্যাচে ২০৪টি উইকেট শিকার করেছেন। এছাড়া ২০২৩ সালের অ্যাশেজে তিনি সিরিজ সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতেছিলেন।
ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) চেয়ারম্যান রিচার্ড থম্পসন ওকসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘এই গ্রীষ্মে স্লিংয়ে হাত ঝুলিয়ে টেস্ট ম্যাচ জেতানোর জন্য তার মাঠে নামার দৃশ্যই প্রমাণ করে, সে দেশের জন্য খেলতে কতটা নিবেদিত ছিল। মাঠের বাইরে সে একজন ভদ্রলোক এবং মাঠে একজন লড়াকু যোদ্ধা, যে ব্যাট ও বল হাতে বারবার বড় মঞ্চে জ্বলে উঠেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৯ বিশ্বকাপে নতুন বলে তার দুর্দান্ত বোলিং, ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয় থেকে শুরু করে ২০২৩ অ্যাশেজে সিরিজ-সেরা পারফরম্যান্সের মতো অসংখ্য বিশেষ স্মৃতি রয়েছে। ক্রিসের মতো একজন ক্রিকেটার ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করায় আমরা ঋণী। গত ১৪ বছর ধরে ইংল্যান্ডের জার্সিতে তার অবদানের জন্য আমি তাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।’
]]>