আদালত বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, অবশেষে বিএনপি নেতার নামে মামলা

৩ সপ্তাহ আগে
নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালত প্রাঙ্গনে এক বিচারপ্রার্থী ও তার স্ত্রী সন্তানদের উপর হামলা করে প্রকাশ্যে মারধর এবং লাঞ্চিত করার অভিযোগে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানসহ (৫০) ছয়জনকে আসামি করে ফতুল্লা থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ঘটনার তিনদিন পর বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে।

 

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক তদন্ত আনোয়ার হোসেন।

 

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- ইসমাইল (৪৬), হিরন (৩৮), শাহ আলম (৪৮), টিটু (৫০) ও রাসেল ব্যাপারি (৩৫)।

 

এর আগে গত রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে ফতুল্লা থানায় মামলার জন্য লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগি নারী রাজিয়া সুলতানা।

 

আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হত্যা: ৪ দিনের রিমান্ডে ২ আসামি

 

তবে লিখিত অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান এর নাম থাকায় পুলিশ মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ রাজিয়া সুলতানার। পরে গত দুইদিন রাজিয়া তার শিশু সন্তানকে নিয়ে থানার গেটে অবস্থান নিয়ে কান্নাকাটি করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে পুলিশ মামলা গ্রহণ করে।

 

মামলার বিবরণে বাদী উল্লেখ করেন, ফতুল্লার ইসদাইর এলাকার বাসিন্দা ইরফান মিয়া শহরের কালিরবাজারে স্যানিটারির দোকানের ব্যবসা করেন। ব্যবসা সূত্রে ইসমাইল নামে এক ব্যক্তির কাছে তিনি ২৫ লাখ টাকা পান। টাকা আদায়ের জন্য আদালতে একটি মামলাও করেন ইরফান। সেই মামলার শুনানির ধার্য তারিখ গত ২৬ অক্টোবর (রোববার) দুপু‌রে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি আদাল‌তে উপস্থিত হন। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান তাকে জোর করে আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেন।

 

এরপর সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে কয়েকজন জুনিয়র আইনজীবী ও আসামিপক্ষের লোকজন মিলে তাদের উপর হামলা চালায়। ১৫ থেকে ২০ জন মিলে তাদেরকে বেধড়ক মারধর করে। হামলাকারীরা ইরফানের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানাকে লাঞ্চিতও করে। পরে আশপাশের লোকজনের সহায়তায় পরিবারটির আহত চারজন শহরের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন।

 

এ ঘটনায় ওইদিন বিকেলে আহত ব্যবসায়ী ইরফান মিয়ার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে নয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে।

 

মামলার বাদী রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘আজকে থানা থেকে আমাকে ফোন করে জানানো হয়েছে যে মামলাটি নেয়া হয়েছে। আমরা থানা থেকে মামলার কপিটি সংগ্রহ করেছি। তবে কপিতে সাখাওয়াতের নামটি ঘোলা করা।’

 

আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে আদালতপাড়ায় বিচার প্রার্থীকে মারধর, বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ

 

এ বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেবে।’

 

তবে মারধরের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ইমেজ নষ্ট করতে প্রতিপক্ষের লোকজন ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ এই বিএনপি নেতার।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন