৮ ডিসেম্বর রাত থেকেই শহরের বর্তমান কৃষিফার্ম এলাকায় এম্বুশ পেতে অপেক্ষায় ছিলেন বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা।
টাইগার খ্যাত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সিদ্দিক আহমদের নেতৃত্বে ভোরের আলো ফোটতেই শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ।
মরণপণ লড়াই করে নেত্রকোনা শহরকে মুক্ত করতে সন্মুখ সমরে শহীদ হয়েছিলেন আবু খাঁ, আব্দুস সাত্তার, আব্দুর রশিদ।
৮ ডিসেম্বর রাত থেকে শুরু করে রাজুরবাজার, চকপাড়া, সাতপাই, কাটলী, নাগড়া, কৃষিফার্ম এলাকা থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০ টা পর্যন্ত অবিরাম যুদ্ধ চালিয়ে পাকিদের ময়মনসিংহের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে।
তিনজন মুক্তিযোদ্ধার স্মরণে একটি স্মৃতিফলকও হয়েছিল। কিন্তু অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির প্রেক্ষিতে স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর তৎকালীন জেলা প্রশাসক তরুণ কান্তি শিকদার কালেক্টরেট প্রাঙ্গণেই নির্মাণ করেন প্রজন্ম শপথ।
আরও পড়ুন: আজ সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস
বীরত্বগাথা দিবসটি স্মরণে ‘প্রজন্ম শপথ’ নামের ভাস্কর্য নির্মাণে খুশি হয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা।
প্রতিবছর দিবসটি উদযাপনে জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী নানা আয়োজন করে।
দিবসটির সঠিক ইতিহাস নিয়ে প্রজস্মের কাছে তুলে ধরতে হবে বলে জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে দিবসটি পালিত হয়।
যে কারণে জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী। তিনি বলেন, আমাদের ১৬ ডিসেম্বর যেমন আনন্দের ঠিক ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনাবাসীর কাছে তেমনি আনন্দের। শহর শত্রু মুক্ত হতেই চারদিক থেকে মানুষ হৈ হুল্লোড় করে আনন্দে বাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। আমাদেরকে অভিনন্দন জানায়। এ দিনটি আসলে আমরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি।
নেত্রকোনার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সূত্রে পাওয়া তথ্য মতে, স্বাধীনতা যুদ্ধে নেত্রকোনা জেলার ৩ হাজার ৪২৭ জন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তার মধ্যে মুসলিম যোদ্ধা ২ হাজার ৯০৮ জন এবং হিন্দু ছিলেন ৪২৮ জন, আদিবাসী ছিলেন ৯১ জন। এর মধ্যে কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন ৩৪ জন। শহীদ হয়েছেন মোট ৬৬ জন।