এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও মুখোমুখি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে এই ম্যাচ। গত সপ্তাহে এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ভারতের কাছে কোনো পাত্তাই পায়নি পাকিস্তান। তবে ম্যাচের ফলাফল যাই হোক না কেন, হ্যান্ডশেক ইস্যুতে সরগরম ছিল পুরো ক্রিকেট দুনিয়া।
সাম্প্রতিক সময়ে দুই দলের মাঠের লড়াইয়ের কোনো উত্তেজনা নেই, তার চেয়ে এখন বেশি উত্তেজনা ছড়াচ্ছে মাঠের বাইরে কথার লড়াই। এসব আলোচনা-সমালোচনাই মূলত এই দুই দলের লড়াইয়ের উত্তেজনা বাঁচিয়ে রেখেছে। কেননা, সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের একটিও জিততে পারেনি পাকিস্তান।
গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) টসের সময় হাত মেলাননি ভারতের অধিনায়ক। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট নিজেই নাকি পাকিস্তানের অধিনায়ককে হাত মেলাতে বারণ করেছিলেন। ম্যাচ শেষেও পাকিস্তানের কোনো ক্রিকেটারের সঙ্গে হাত মেলাননি ভারতের কেউ। তারই রেশ ধরে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটকে এশিয়া কাপ থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানায় পিসিবি। আইসিসিতে নালিশও করেছিল, তবে পিসিবির আবেদনে কোনো সাড়া দেয়নি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক এই সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: বিসিবি নির্বাচনে স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তামিমদের
গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। পাইক্রফটকে বাদ না দেওয়ায় সে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলন বয়কট করেছিল পাকিস্তান। ভারত ম্যাচের আগেও একই কাজ করেছে তারা, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে রাজি হয়নি পাকিস্তানের কেউ।
আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে নিজেরাই বৈঠকে বসেছিলেন, পাকিস্তানের কর্তাদের সেই বৈঠকের কারণে ম্যাচটি মাঠে গড়িয়েছিল ১ ঘণ্টা পর। পাকিস্তান তখন দাবি করেছিল, অ্যান্ডি পাইক্রফট নাকি ক্ষমা চেয়েছেন, যে কারণে তারা ম্যাচটি খেলেছে।
ভারত ম্যাচের আগের দিন (শনিবার-২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১ ঘণ্টা আগে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়, পাকিস্তানের কোনো প্রতিনিধি সংবাদ সম্মেলনে আসবেন না। তবে ঠিক কি কারণে সংবাদ সম্মেলনে আসবেন না, সে বিষয়ে পিসিবি কিংবা এসিসির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
এবারের এশিয়া কাপের রীতি হলো, এক দিনের বিরতিতে কারও ম্যাচ থাকলে একসঙ্গে ম্যাচ পরবর্তী ও ম্যাচ পূর্ববর্তী দুটি সংবাদ সম্মেলনই করে ফেলা। আবুধাবিতে ভারতের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটি ছিল গত পরশু দিন (১৯ সেপ্টেম্বর), সে ম্যাচের পর সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেছেন ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব।
আরও পড়ুন: ভারত ম্যাচের আগে মনোবিদ নিয়োগ দিলো পাকিস্তান
ভারতের অধিনায়কের কাছে জানতে চাওয়া হয়, মাঠের বাইরে এত ঘটনা থেকে ক্রিকেটারদের দূরে থাকা সম্ভব কি না। উত্তরে সূর্যকুমার বলেন, ‘রুমের দরজা বন্ধ করে দাও, মুঠোফোন বন্ধ রাখো আর ঘুমাও।’
তবে চাইলেই কি আর তা সম্ভব? সূর্যকুমার বলেন, ‘বাইরে থেকে কিছু জিনিস নেওয়া যায়, যেটা ভালো। কেউ একটা ভালো পরামর্শও দিতে পারে, যেটা ম্যাচে ও মাঠে সাহায্য করতে পারে।’
সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তানের লড়াইটা কেমন একপেশে হয়ে গেছে। তবুও এর উত্তেজনার এতটুকুও কমতি নেই। একপেশে লড়াই হলেও গ্যালারি ভর্তি দর্শক থাকে দুই দলেরই। আর মাঠের বাইরে কথার লড়াই তো আছেই।
আজ মাঠে কি ঘটবে? এ প্রশ্নের উত্তরও হয়তো কারো কাছে নেই, আর না থাকারই কথা। মাঠে কি ঘটবে না ঘটবে, কে-ই বা জানে। আগের ম্যাচেও কি কেউ জানতো যে ভারতের কেউ পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাবেন না। আজও কি সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে, নাকি মাঠের বাইরের সব ভুলে ক্রিকেটের সৌন্দর্য রক্ষা করার জন্য হলেও অন্তত বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণই করবে ভারতের ক্রিকেটাররা।
]]>