ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক আইসিইউ ভবনের নিচের পরিবেশ দেখলে মনে হবে পরিত্যাক্ত কোনো ভবন। সেখানে প্রবেশ করতে প্রায় প্রতিদিনই মিলবে ময়লাসহ জমে থাকা পানির দৃশ্য।
শুধু ভবনের নিচে নয়, এমন অস্বস্তিকর পরিবেশের অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন ওয়ার্ড সংশ্লিষ্ট ওয়াশরুমের পরিচ্ছন্নতা নিয়েও, যা বেশিরভাগ সময়ই থাকে ব্যবহার অযোগ্য।
রোগী ও তাদের স্বজনরা বলছেন, ওয়াশরুমের অবস্থা খুবই খারাপ। ঠিক মতো পানি থাকে না, ময়লা-আবর্জনা। দুর্গন্ধে প্রবেশ করাই কঠিন হয়ে যায়। সব মিলিয়ে ওয়াশরুমে গেলে খুবই অস্বস্তিকর লাগে। আর বাহিরের অবস্থাও খুব খারাপ।
আরও পড়ুন: প্রচলিত নিয়ম ভেঙে ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু, বেশি ঝুঁকিতে শিশুরা
তথ্য বলছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখতে দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন প্রায় ৫৮০ জন। আর অন্যান্য হাসাপাতালে হয় আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে। তবে সরকারের অর্থ ব্যয় হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হচ্ছে না সেবার লক্ষ্য পূরণ। একইসঙ্গে হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করা ক্লিনিং উপকরণ ব্যবহার না করা ও নির্দিষ্ট পয়েন্টে কাজে না থেকে অন্য কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে এসব জনবলের বিরুদ্ধে। এসব বিষয় আমলে নিয়ে এবার আউটসোর্সিংয়ে জনবল নিয়োগের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠানের কাছেই সেবা বুঝে নিতে চায় সরকার। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানান, এই ব্যবস্থাপনায় অসৎ কারবার কমে আসার পাশাপাশি বাড়বে সেবার মান।
তিনি বলেন,
পরিচ্ছন্নতার জন্য জন্য আমরা যত লোকই নিই না কেন, তারা কাজ করেন না। দেখা গেল, তারা সকালে পরিষ্কার করেন, পরে দ্বিতীয়বার আর করেন না। আমরা এখন চাইছি, সেবা কেনার জন্য। সোজা কথায় আমি যদি বলি যে আমার এতটা টয়লেট আছে, এগুলো পরিষ্কার করতে হবে। কোনো কোম্পানিকে বলবো যে, এগুলো মেশিন দিয়ে পরিষ্কার করবা নাকি জনবল দিয়ে করবা, সেটা তোমার ব্যাপার। এর ফলে ক্লিনিং উপকরণ কিনতে হবে না। সেইসঙ্গে মানুষগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নতুন করে লোক নিয়োগ দিতে হবে না।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ দফতরের শৌচাগারে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ
জনবল কিংবা কোম্পানি, পূর্ব অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে সেবা নিশ্চিত করতে শক্তভাবে জবাবদিহিতার কথা বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল বা ভারতে এই ব্যবস্থা আছে। নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়াটি কীভাবে হচ্ছে, পরবর্তীকালে তাদেরকে ঠিকভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে কিনা, তাদের কোনো স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিউর আছে কিনা, সেবাগ্রহীতারা কোনো অভিযোগ করলে সেটিকে এড্রেস করা হচ্ছে কিনা-- এই বিষয়গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।
দীর্ঘ দেড় দশক ধরে স্থায়ী জনবল নিয়োগের পরিবর্তে বেশিরভাগ দফতরে নিম্নপদে নিযুক্ত রয়েছে আউটসোর্সিং জনবল। অভিযোগ রয়েছে, টেন্ডারের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানে এসব জনবল নিয়োগ দেয় প্রভাবশালীদের কোম্পানি। কাজে নিযুক্ত হওয়ার পর অনেকেই মাসভিত্তিতে এই কাজ বিক্রি করেন অন্যের কাছে। এতে জবাবদিহিতার বাইরে থেকে যান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। নতুন উদ্যোগে বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্রের অপেক্ষায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
]]>