আইয়ামে বিজের রোজা কী?
প্রতি চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজাকে আইয়ামে বিজের রোজা বলা হয়। এই তিন দিন চাঁদ অনেক সাদা দেখায় তাই এ দিনগুলোকে আইয়ামে বিজ বা সাদার দিন বলা হয়।
আইয়ামে বিজের রোজার ফজিলত
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
شَهْرُ الصَبْرِ، وَثَلَاثَةُ أَيّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ صَوْمُ الدّهْرِ
অর্থ: সবরের মাস (রমজান) ও প্রতি মাসে তিন দিন সারা বছর রোজার সমতুল্য। (নাসায়ি: ৪/২১৮, হাদিস: ২৪০৮)
হজরত আবু যর গিফারী (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
إِذَا صُمْتَ مِنْ شَهْرٍ ثَلَاثًا، فَصُمْ ثَلَاثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَة
অর্থ: তুমি যদি মাসে তিনদিন রোযা রাখ তাহলে তেরো তারিখ, চৌদ্দ তারিখ ও পনেরো তারিখ রোযা রেখো। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২১৪৩৭; তিরমিজি, হাদিস: ৭৬১)
আরও পড়ুন: বাম চোখ লাফালে কি বিপদ আসে?
ইবনে মাজাহর বর্ণনায় আছে,
فَأَنْزَلَ اللهُ عَزّ وَجَلّ تَصْدِيقَ ذَلِكَ فِي كِتَابِهِ: مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا فَالْيَوْم بِعَشْرَةِ أَيّامٍ
অর্থ: আল্লাহর কিতাবে এর সমর্থন রয়েছে, যে নেক কাজ করবে সে তার দশ গুণ পাবে। তো এক দিন সমান সমান দশ দিন। (দ্র. সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ১৭০৮)
নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
হে আব্দুল্লাহ, তোমার জন্য যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোজা রাখবে। কেননা নেক আমলের বদলে তোমার জন্য রয়েছে দশগুণ নেকি। এভাবে সারা বছরের রোজা হয়ে যায়। (মুসলিম ২৬১৯)
প্রতি চান্দ্র মাসে তিনটি রোজা রাখা মুস্তাহাব। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো এ রোজাগুলো ছাড়তেন না। তিনি সব সময় আইয়ামে বিজের রোজা রাখতেন। এমনকি সফরেও। তবে রোজাগুলো ফজিলতপূর্ণ হলেও তিনি উম্মতের জন্য এ রোজাকে বাধ্যতামূলক করেননি।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ভিজলে কি অজু হয়ে যাবে?
আইয়ামে বিজের রোজা রাখার নিয়ম
প্রতি চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখবে। এ রোজা রাখার বিশেষ কোনো নিয়ম নেই। স্বাভাবিকভাবেই রোজা রাখবে। ফরজ-ওয়াজিব রোজার জন্য যেমন নিয়ত করতে হয়, নফল রোজার জন্যও নিয়ত করতে হয়। রমজানের ফরজ রোজা ও নফল রোজার নিয়ত রাতে করা উত্তম।
যদি কেউ রাতে নিয়ত না করে তাহলে দিনের বেলা মধ্য আকাশ থেকে সূর্য পশ্চিমে ঢলার দেড় ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত নিয়ত করা যাবে। তবে সুবহে সাদিকের পর থেকে নিয়তের পূর্ব পর্যন্ত রোজার পরিপন্থি কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সুবহে সাদিকের পর রোজার পরিপন্থি কোনো কাজ করলে অর্থাৎ কিছু খেলে, পান করলে বা রোজা ভেঙে যায় এমন কিছু করলে আর রোজার নিয়ত করার সুযোগ থাকবে না।
]]>