আ.লীগ-ভারত বিরোধী ভিডিওর জেরে কনটেন্ট ক্রিয়েটরের বাড়িতে হামলার অভিযোগ

৫ দিন আগে
পাবনার সুজানগর উপজেলায় ভারত ও আওয়ামী লীগবিরোধী ভিডিও কনটেন্ট প্রকাশ করায় এক কনটেন্ট ক্রিয়েটরের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার দুলাই ইউনিয়নের চর জোরপুকুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

রোববার (২৯ জুন) বিকেলে সুজানগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাইমুম সাজিদ।


অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সাইমুম সাজিদ তার ফেসবুক পেজে নিয়মিত ভারতবিরোধী ও আওয়ামী লীগবিরোধী ব্যঙ্গাত্মক (ফানি) ভিডিও পোস্ট করতেন। সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটি ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও প্রকাশ করেন তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা শনিবার সন্ধ্যায় ধারালো অস্ত্র, লোহার রড, চাইনিজ কুড়াল, লাঠিসোঁটা নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়।


হামলার সময় পরিবারের সদস্যদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার পাশাপাশি, ঘরে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সাইমুমের অভিযোগ, আলমারিতে থাকা ২ লাখ টাকা নগদ ও সাড়ে ৩ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। এ ঘটনায় প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।


হামলার সময় তিনি ফেসবুক লাইভে এসে বিষয়টি প্রচার করেন এবং জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


সাইমুম সাজিদ বলেন, 'আমি একটি ফানি ভিডিও বানিয়েছিলাম, যেখানে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রম ব্যঙ্গ করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে ভারতের কিছু সাংবাদিকের বিরুদ্ধেও ভিডিও করেছিলাম। এরপর থেকেই তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। আমার বাবা বিএনপির সক্রিয় কর্মী হওয়ায় আমাদের পরিবার আগে থেকেই আওয়ামী লীগের লোকজনের চাপ ও হামলার শিকার হয়ে আসছে।'


তিনি আরও জানান, তিনি কনটেন্ট বানিয়ে আয় করছেন এবং একটি বাড়ি নির্মাণ করছেন- এ বিষয়টিও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সহ্য হচ্ছিল না বলেই তিনি মনে করছেন। তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।


আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নেতার ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে জেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ


লিখিত অভিযোগে অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন- আমিরুল ইসলাম (৩২), মো. কামাল হোসেন (৪২), মো. রফিকুল ইসলাম (৩৫), মো. জামাল উদ্দিন (৪৫), মো. রবিউল ইসলাম (২০), মো. মুক্তার হোসেন (৪৫)। সবাই দুলাই ইউনিয়নের চর জোরপুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।


তবে অভিযুক্তরা বর্তমানে পলাতক এবং তাদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কেউ কল রিসিভ করেননি।


এ বিষয়ে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান বলেন, 'ভুক্তভোগী সাইমুম সাজিদ আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং বিষয়টি তদন্ত করছে। যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন