অশান্ত খুলনাঞ্চল, অপরাধীদের ধরিয়ে দিলেই লাখ টাকা পুরস্কার!

১১ ঘন্টা আগে
হত্যা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অস্ত্রের মহড়াসহ সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধীদের তাণ্ডবে অশান্ত হয়ে উঠেছে খুলনা। বিশেষ করে আধিপত্য বিস্তার ও দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আসায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পুলিশের তৎপরতা ঝিমিয়ে পড়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। তবে এসব ভয়ঙ্কর অপরাধীদের ধরিয়ে দিতে পারলে মাথাপিছু ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

এ বিষয়ে সামাজিক সংগঠন গ্লোবাল খুলনার আহবায়ক শাহ মামুনুর রহমান তুহিন বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে পুলিশ সংকটে ভুগছে। পুলিশি কার্যক্রম করার ক্ষেত্রে নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। গত সরকারের আমলে তাদের জনগণের বিপক্ষে ব্যবহার করা হয়েছে। সেই জায়গাটা তারা অর্জন করতে পারছে না। পুলিশের নৈতিকতা বা প্রফেশনালিজম সেই জায়গাটি তারা হারিয়ে ফেলেছে। যার কারণে এই পুলিশি কার্যক্রম যতক্ষণ পর্যন্ত মজবুত না হচ্ছে, যতক্ষণ না আইনের প্রয়োগ সঠিক হচ্ছে, ততক্ষণ এগুলো চলতেই থাকবে। সন্ত্রাসী মহড়া প্রতিনিয়ত হচ্ছে, যা খুবই ভয়াবহ।’


তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও প্রশাসনিক রদবদলের সুযোগে বেপরোয়া হওয়া এসব সন্ত্রাসীদের লাগাম টানতে নতুন ছক এঁকেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এখন পর্যন্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় উঠে এসেছে ১২ জনের নাম। ইতোমধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করলেও বাকি আটজনকে ধরিয়ে দিতে পারলে মাথাপিছু ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পুরস্কৃত করার ঘোষণা দিয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ।’


আরও পড়ুন: অশান্ত খাগড়াছড়ি পর্যটক শূন্য, দুই সপ্তাহে ক্ষতি ১০ কোটি


এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, ‘কেএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে সম্প্রতি সভা করে খুলনায় অপরাধে নেতৃত্ব দেয়া ১২ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। পুলিশের যে টিম ধরতে পারবে, তাদের জন্য ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ওই ১২ জনের মধ্যে চারজনকে ইতোমধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করা হয়েছে।’


তিনি বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুসহ আটজনকে ধরতে পারলে পুলিশের সেই টিমকে পুরস্কৃত করা হবে। এ ছাড়া পুলিশের বাইরে অন্য কেউ ধরিয়ে দিতে পারলে তাকেও পুরস্কার দেওয়া হবে। তবে অন্য সাতজনের নাম জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।


এ দিকে অপরাধী গ্রেফতারের পর আইনের ফাঁক গলিয়ে সহজেই যাতে বেরিয়ে আসতে না পারে সেজন্য প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের।


আরও পড়ুন: আবু সাঈদের রক্তমাখা ক্যাম্পাসে হয়নি অপরাধীদের তালিকা, তালা ঝুলানোর হুঁশিয়ারি


এ বিষয়ে খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাড. মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, ‘একজন আসামি ধরার পরে সিজার লিস্ট করা, সাক্ষ্য হিসেবে যাদের নাম দেয়া, এবং সামগ্রিক যে বাস্তবতা থাকে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসামি ধরার থেকে শুরু করে আদালতে পাঠানো পর্যন্ত মাঝখানে অনেকগুলো প্রক্রিয়ার মধ্য থেকে যেতে হয়। সেই প্রক্রিয়ার মধ্য যখন ফাঁক থেকে যায় এবং মামলা চলমান অবস্থায় বিচারকার্যের যে স্তর, সেই স্তরগুলোতে যখন নানান রকমের অপ্রাসঙ্গিকতা দেখা যায় তখন আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে আসামিরা বের হয়ে যায়।’


তিনি আরও জানান, যারা আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বে আছেন এবং যারা গ্রেফতার করেন তাদের আইনের ব্যাপারে সতর্ক থাকা দরকার। মামলা বিচারে যাওয়ার পর কোন কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন সেই জায়গাগুলোকে পূরণ করেই মামলাটিকে একটা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া দরকার।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন